শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১২ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পাকিস্তান এনএবি'র 'সীমাহীন ক্ষমতা' ও 'বিতর্কিত কর্মকাণ্ড'

ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো বা এনএবি। বিশ্বব্যাপী এই নামটি এখন ব্যাপক আলোচিত। সম্প্রতি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে রাজধানীর ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করার পর আলোচনায় উঠে এসেছে এনএবি'র নাম। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এনএবি কী, তাদের কাজ কী এবং তারা কতটা শক্তিশালী।

শুরুর কথা
এনএবি গঠন করা হয় ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর। সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফের হাত ধরে এই সংস্থার যাত্রা শুরু। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের বিনাশ ঘটাতে গঠিত এ সংস্থার প্রধান (চেয়ারম্যান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান। এটি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা। স্বায়ত্তশাসিত এ সংস্থার সদরদপ্তর অবস্থিত রাজধানী ইসলামাবাদে এবং করাচি, লাহোর, পেশোয়ার, কোয়েটা, রাওয়ালপিন্ডি, মুলতান ও শুক্কুর শহরে এর আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠাকালে এনএবি চেয়ারম্যান ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ আমজাদ। বর্তমানে এনএবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাজির আহমেদ ভুট্টো। তিনি ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান এবং ২০২৩ সালের ৪ মার্চ চেয়ারম্যান হিসেবে এনএবিতে যোগদান করেন। যদিও এনএবি'র সরকারি ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া নেই, তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন চৌকস ও জাঁদরেল কর্মকর্তা।

উন্মুক্ত জ্ঞানকোষ উইকিপিডিয়া থেকে জানা গেছে, এনএবি গঠনের পর মোশাররফ বলেছিলেন, ''আমি ক্ষমতায় আসার আগে পাকিস্তান 'ব্যর্থ রাষ্ট্র' ঘোষিত হবার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তাই দুর্নীতিবাজদের মধ্যে ঈশ্বরের ভয় টিকিয়ে রাখতে এনএবি গঠন করা হয়েছে।''

কাজের ধরন এবং ক্ষমতা
এনএবি'র কার্যপদ্ধতিতে দুইজন প্রধান ব্যক্তি রয়েছেন। একজন চেয়ারম্যান, যিনি সকল অনুসন্ধান ও পুরো কার্যপদ্ধতির তদারকি করেন এবং অপরজন একজন প্রধান আইন কর্মকর্তা (প্রসিকিউটর জেনারেল), যিনি অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ সকল বিচারকার্য পরিচালনা করেন। প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। চেয়ারম্যানের মেয়াদকাল ৪ বছর এবং প্রসিকিউটর জেনারেলের মেয়াদকাল ৩ বছর।

বর্তমানে এনএবি'র প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লাহোর হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি সৈয়দ আসগর হায়দার। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম 'ডন' সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ আসগর ২০১৮ সালে এনএবি'র প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। তিন বছরের মেয়াদকাল শেষে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে পুনরায় প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

এনএবি'র অধ্যাদেশে উল্লেখ ছিল 'মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না শর্তে একজন প্রসিকিউটর জেনারেল কেবল এক মেয়াদকাল দায়িত্ব পালন করতে পারবেন'। তবুও তার মেয়াদকাল বৃদ্ধি হওয়ায় তখন ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। তবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ড. আরিফ আলভি একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে উল্লিখিত বিধানটি সংশোধন করেন। সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুসারে, 'প্রসিকিউটর জেনারেল তিন বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন এবং একই বা একাধিক মেয়াদের জন্য পুনরায় নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন।'

রাষ্ট্রের মূল বিচার ব্যবস্থা থেকে এনএবি'র বিচার ব্যবস্থা আলাদা এবং সংস্থাটি নিজস্ব আদালত পরিচালনা করে। এর নিজস্ব তদন্তকারী দল এবং যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের লাগামহীন ক্ষমতা রয়েছে। এমনকি গ্রেপ্তারকৃতদের আটকে রাখার জন্য আলাদা কারাগারও রয়েছে। যার সব কিছুই পাকিস্তানের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত।

২০১৩ সালে এনএবি বিপুল সংখ্যক তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় এবং ইসলামাবাদের COMSATS বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়। চাকরির বাইরে ৭ মাস এবং চাকরিরত অবস্থায় ২ মাসের প্রশিক্ষণ সফলভাবে সমাপ্ত করার পরে, দেশের বিভিন্ন কার্যালয়ে তাদের পদায়ন করা হয়।

পাকিস্তানের আইন মন্ত্রণালয়ের মতে, এনএবি'র দায়িত্ব হল বলপ্রয়োগ, প্রসিকিউশন, সচেতনতা এবং প্রতিরোধের মাধ্যমে দুর্নীতি দূর করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য একটি আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।

তদন্ত এবং পরবর্তী বিচারকার্যে কয়েক মাস সময় এমনকি বছর গড়াতে পারে এবং বিচারকার্য শেষ হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের আটকে রাখতে পারে এনএবি।

পাকিস্তানের অধিকাংশ পাবলিক রেকর্ড এখনো ইলেকট্রনিকভাবে আর্কাইভ না করা বা কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে সংযুক্ত না করার কারণে বিচারযোগ্য প্রমাণ সংগ্রহে অসুবিধা এবং ধীরগতির বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে এনএবি'র কার্যক্রম এখনো বেশ চ্যালেঞ্জিং।

তদন্ত ও অর্জন
এনএবি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সংস্থাটি ৪ হাজার ৭৪৭টি তদন্ত পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে আদালতে ৩ হাজার ৫৩৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলার ফলস্বরূপ ১ হাজার ১৯০টি মামলায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, ৭৭১টি মামলা খালাস হয়েছে এবং ১০০ মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এনএবি সূত্রে আরও জানা যায়, সৃষ্টির পর থেকে সংস্থাটি দেশের অভিজাত রাজনীতিবিদ, আমলা, প্রাক্তন সামরিক অফিসার এবং কর্পোরেট অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দ্বারা সংঘটিত দুর্নীতি থেকে ২৪০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির বা প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পুনরুদ্ধার করেছে।

২০২০ সালে ইমরান খানের আমলে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে গ্রেপ্তার করে বেশ কয়েক মাস আটকে রেখেছিল এনএবি। এ ছাড়াও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সকল প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে তদন্ত, বিচার এবং কারাগারে পাঠিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী এই সংস্থাটি।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ২০১৮ সালে এনএবি আদালতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে অবশ্য একটি উচ্চ আদালত মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে হওয়া রায় বাতিল করেন।

বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং সর্বোচ্চ আদালতের ভর্ৎসনা
শুরু থেকেই সংস্থাটির কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। প্রধানত এর লাগামহীন ক্ষমতার এবং যে কোনো ব্যক্তিকে তদন্ত করে কলঙ্কিত করলেও পরে তাদের নির্দোষ বলার কারণে।

কাগজে-কলমে এনএবি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং রাজনীতিবিদদের মতে, সংস্থাটিকে প্রায়ই দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিরোধী দলকে দমন করার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যদিও, ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে এনএবি।

যদিও দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সবাই একমত। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, সে দিক থেকে সংস্থাটির খুব বেশি সাফল্য নেই। বরং এনএবি'র তদন্তের ভয় এত বেশি যে সরকারি কর্মকর্তারা প্রকল্পগুলো স্বচ্ছ রাখতে কাজে ধীরগতির অবতারণা করেন।

আইন অনুযায়ী সংস্থাটি শুধুমাত্র সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে। তবে পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে যে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত এবং বিচার চালিয়েছে এনএবি।

অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনার কারণে সুপ্রিম কোর্ট একাধিকবার সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজা 'দর কষাকষি' করার জন্য সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে 'প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি' বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজার 'দর কষাকষি' মন্তব্য সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলেন, সংস্থাটি প্রথমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা করে। তদন্ত ও বিচার থেকে পরিত্রাণ পেতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে এনএবি দ্বারা নির্ধারিত 'খরচ' দিতে হয়।

আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন বিচারপতি খাজা আরও বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, কিছু এনএবি কর্মকর্তা প্রভাবশালী সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের আগে সতর্ক করে দেয় যাতে তারা পালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়।

গেল মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে তুলে নিয়ে যায় এনএবি। বিষয়টিকে বেআইনি ঘোষণা করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এনএবি'র এহেন কর্মকাণ্ডকে দেশের বিচারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বড় অসম্মান বলে মন্তব্য করেন দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। প্রধান বিচারপতি তার মন্তব্যে এনএবি-কে ভর্ৎসনা করে বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি যে ইমরান খানের গ্রেপ্তার বেআইনি ছিল' এবং একইসঙ্গে 'আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে না' বলে নির্দেশ দেন তিনি।

সংশোধনী
চলতি বছরের মার্চ মাসে, পিটিআই ব্যতীত দেশের সমগ্র রাজনীতিবিদরা সংস্থাটির ক্ষমতা সীমিত করার লক্ষ্যে আইন সংশোধন করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। পূর্বে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জামিনবিহীন ৯০ দিন পর্যন্ত আটকে রাখতে পারত এনএবি, বর্তমানে সে আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ সময়কাল করা হয়েছে ১৪ দিন। এ ছাড়া সংস্থাটিকে একটি মামলা এক বছরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

তবে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকলেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী যে পরোক্ষভাবে জড়িত এনএবি'র সীমাহীন ক্ষমতা তারই উদাহরণ এবং ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা ইস্যুতে আইএসপিআর-এর দেওয়া বিবৃতি সেদিকেই ইঙ্গিত করে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তথ্যসূত্র: জিও নিউজ, ডন, উইকিপিডিয়া এবং এনএবি'র সরকারি ওয়েবসাইট

/এএস

Header Ad
Header Ad

জুমার নামাজের ফজিলত, গুরুত্ব ও হাদিস

ছবি: সংগৃহীত

মুমিনের ইবাদতের কিছু বিশেষ মৌসুম রয়েছে। যে মৌসুমগুলোতে একজন মুমিন অল্প আমলেও অধিক সাওয়াবের অধিকারী হতে পারেন। 

আর শুক্রবার সপ্তাহের সেরা দিন। জুমা নামে পবিত্র কুরআনে একটি সুরা রয়েছে। আর ইসলামের দৃষ্টিতে জুমার দিনটি অনেক বরকতময় ও তাৎপর্যপূর্ণ।মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা এ দিনকে অন্যান্য দিনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। পবিত্র কোরআন ও হাদীসে জুমার দিনের বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।আল্লাহ তায়ালা এই দিনের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন‘মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝ।’ (সূরা জুমুআ : ০৯)।

 

জুমার নামাজ

‘জুমা’ শব্দের অর্থ এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। শুক্রবার মসজিদে জোহরের চার রাকাতের পরিবর্তে কাতারবদ্ধ হয়ে দুই রাকাতের যে ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, ইসলামের পরিভাষায় সেটিই সালাতুল জুমা বা জুমার নামাজ।

জুমার নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব

জুমার নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র আল-কোরআনে ‘জুমা’ (জমায়েত) নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। সেটি ৬২ নম্বর সুরা। তাতে জুমার নামাজের গুরুত্ব বর্ণনা করে আল্লাহ বলছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও কেনাবেচা বন্ধ রাখবে। এ-ই তোমাদের জন্য ভালো; যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)

জুমার নামাজের আজান দেওয়ার পর সব বৈষয়িক কাজ স্থগিত রেখে নামাজ আদায় করার জন্য আল্লাহ সবাইকে মসজিদে কাতারবন্দী হওয়ার আদেশ দিয়েছেন। এর পরের আয়াতেই বলা হয়েছে, ‘নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)। অর্থাৎ আল্লাহর হক আদায় করার মাধ্যমে আখিরাতের সম্পদ অর্জন করার পর আবার দুনিয়ার সম্পদ তথা স্বাভাবিক রুটিরুজির অন্বেষণে ছড়িয়ে পড়তে বলা হচ্ছে।
জুমার নামাজ সম্পর্কে হাদিস
জুমার দিনটি এবং এই দিনের আমল সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এককভাবে অন্য কোনো দিন বা দিনের নামাজ নিয়ে এত বর্ণনা আর পাওয়া যায় না। আমলের দিক থেকে আল্লাহ তাআলা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন, জুমা তার অন্যতম।

মক্কায় লাখো মুসল্লির জুমার নামাজ আদায়

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন,

‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে প্রথম মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল;

দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল;

তৃতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল এবং সে যেন একটি ছাগল কোরবানি করল।

অতঃপর চতুর্থ যে ব্যক্তি মসজিদে গেল, সে যেন একটি মুরগি সদকা করল।

আর পঞ্চম যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ডিম সদকা করল।

এরপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুতবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুতবা শুনতে বসে যায়।’ (বুখারি: ৮৮১)

Header Ad
Header Ad

ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে জম্মু-কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) দুই পক্ষের মধ্যে এই গুলিবিনিময় হয়।

সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রথমে ভারতের কয়েকটি পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি চালায়। জবাবে ভারতের সেনাবাহিনীও গুলি চালিয়েছে।

সূত্রগুলো আরও দাবি করেছে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কার্যকরভাবে জবাব দিয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মঙ্গলবার ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার কয়েক দিন পর দুই দেশের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এই দাবি তীব্রভাবে অস্বীকার করে এবং ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবেও অভিহিত করেছে।

হামলার পরদিন বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত।

ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বুধবার বেশ কয়েকটি পালটা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। পালটাপালটি এসব পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে যা হয়তো সামরিক সংঘাতে গড়াতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

এবার ভারতীয়দের সকল ভিসা স্থগিত করল পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত

ভারত-শাসিত কাশ্মিরে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেছে এবং এরই প্রেক্ষিতে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা তথা সমানুপাতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পাকিস্তান।

ইসলামাবাদ তাৎক্ষণিকভাবে ভারতীয় নাগরিকদের দেওয়া সমস্ত ভিসা স্থগিত করেছে। এর পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতের কিছু কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও চরম উত্তেজনায় পৌঁছেছে। গত মঙ্গলবারের ওই হামলায় একদল বন্দুকধারী পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়, যাতে ২৬ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন।

ঘটনাটিকে গত কয়েক বছরের মধ্যে কাশ্মিরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর কমিয়ে আনে এবং একাধিক পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে—দুই দেশের মধ্যে চলাচলের প্রধান স্থলপথ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেওয়া এবং ৬০ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণাও রয়েছে।

জবাবে পাকিস্তানও বেশ কিছু পাল্টা কড়া সিদ্ধান্ত নেয়। দেশটি ভারতের সব ফ্লাইটের জন্য পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্থগিত করে। এছাড়া ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনে কর্মরত কূটনীতিকের সংখ্যা ৩০ জনে নামানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় নৌ, বিমান ও সামরিক উপদেষ্টাদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাকিস্তান ছাড়তে বরঅ হয়েছে।

এদিকে কাশ্মিরজুড়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। কয়েকদিন ধরে বন্ধ থাকা স্কুল, দোকানপাট ও ব্যবসা এখন ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে হামলার এই ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মিরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। জম্মু-কাশ্মির ছাত্র সংঘের প্রধান নাসির খুইহামি জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের মারধরের হুমকি দিয়ে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে।

যদিও এই ভিডিওগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুমার নামাজের ফজিলত, গুরুত্ব ও হাদিস
ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি
এবার ভারতীয়দের সকল ভিসা স্থগিত করল পাকিস্তান
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্ত্রী জাহানারা আবেদিন মারা গেছেন
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের জামাতাকে অবসরে পাঠালো সরকার
পারভেজ হত্যার ঘটনায় সেই দুই নারী শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
আমাদের মধ্যে হিংসা নেই, আমরা আওয়ামী লীগ নই: রুমিন ফারহানা
পাকিস্তানে ঢুকে আটক বিএসএফ জওয়ান, দু’দেশের সীমান্তে ফের উত্তেজনা
টাঙ্গাইলে ফাঁকা গুলি ছু‌ড়ে ৭৮ লাখ টাকা ডাকাতি, গ্রেফতার ২
পাবনায় ইজিবাইক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে ২ এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
পাকিস্তানের আকাশে ঢুকতে পারবে না ভারতীয় বিমান, নতুন চাপে মোদি
টানা ৫ দিন চুয়াডাঙ্গায় বইছে তাপপ্রবাহ, বিপর্যস্ত জনজীবন
বাংলাদেশ সফর স্থগিত করলেন পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আমাদের নিয়ত পরিষ্কার, যা কমিটমেন্ট করেছি তা বাস্তবায়ন করবো: তারেক রহমান
টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাঙ্কিং: দেশের শীর্ষে বুয়েট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়
অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগে ডা. জাহাঙ্গীর কবির-তাসনিম জারার বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ (ভিডিও)
তন্ময়সহ শেখ পরিবারের ৪ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চলতি বছরে দেশে আরো ৩০ লাখ মানুষ দরিদ্র হতে পারে: বিশ্বব্যাংক
৮ দিন পর মুক্তি পেলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী
পাকিস্তানের সঙ্গে কখনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে না ভারত