সোমবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৯ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পাকিস্তান এনএবি'র 'সীমাহীন ক্ষমতা' ও 'বিতর্কিত কর্মকাণ্ড'

ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো বা এনএবি। বিশ্বব্যাপী এই নামটি এখন ব্যাপক আলোচিত। সম্প্রতি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে রাজধানীর ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করার পর আলোচনায় উঠে এসেছে এনএবি'র নাম। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এনএবি কী, তাদের কাজ কী এবং তারা কতটা শক্তিশালী।

শুরুর কথা
এনএবি গঠন করা হয় ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর। সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফের হাত ধরে এই সংস্থার যাত্রা শুরু। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের বিনাশ ঘটাতে গঠিত এ সংস্থার প্রধান (চেয়ারম্যান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান। এটি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা। স্বায়ত্তশাসিত এ সংস্থার সদরদপ্তর অবস্থিত রাজধানী ইসলামাবাদে এবং করাচি, লাহোর, পেশোয়ার, কোয়েটা, রাওয়ালপিন্ডি, মুলতান ও শুক্কুর শহরে এর আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠাকালে এনএবি চেয়ারম্যান ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ আমজাদ। বর্তমানে এনএবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাজির আহমেদ ভুট্টো। তিনি ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান এবং ২০২৩ সালের ৪ মার্চ চেয়ারম্যান হিসেবে এনএবিতে যোগদান করেন। যদিও এনএবি'র সরকারি ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া নেই, তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন চৌকস ও জাঁদরেল কর্মকর্তা।

উন্মুক্ত জ্ঞানকোষ উইকিপিডিয়া থেকে জানা গেছে, এনএবি গঠনের পর মোশাররফ বলেছিলেন, ''আমি ক্ষমতায় আসার আগে পাকিস্তান 'ব্যর্থ রাষ্ট্র' ঘোষিত হবার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তাই দুর্নীতিবাজদের মধ্যে ঈশ্বরের ভয় টিকিয়ে রাখতে এনএবি গঠন করা হয়েছে।''

কাজের ধরন এবং ক্ষমতা
এনএবি'র কার্যপদ্ধতিতে দুইজন প্রধান ব্যক্তি রয়েছেন। একজন চেয়ারম্যান, যিনি সকল অনুসন্ধান ও পুরো কার্যপদ্ধতির তদারকি করেন এবং অপরজন একজন প্রধান আইন কর্মকর্তা (প্রসিকিউটর জেনারেল), যিনি অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ সকল বিচারকার্য পরিচালনা করেন। প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। চেয়ারম্যানের মেয়াদকাল ৪ বছর এবং প্রসিকিউটর জেনারেলের মেয়াদকাল ৩ বছর।

বর্তমানে এনএবি'র প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লাহোর হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি সৈয়দ আসগর হায়দার। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম 'ডন' সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ আসগর ২০১৮ সালে এনএবি'র প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। তিন বছরের মেয়াদকাল শেষে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে পুনরায় প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

এনএবি'র অধ্যাদেশে উল্লেখ ছিল 'মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না শর্তে একজন প্রসিকিউটর জেনারেল কেবল এক মেয়াদকাল দায়িত্ব পালন করতে পারবেন'। তবুও তার মেয়াদকাল বৃদ্ধি হওয়ায় তখন ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। তবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ড. আরিফ আলভি একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে উল্লিখিত বিধানটি সংশোধন করেন। সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুসারে, 'প্রসিকিউটর জেনারেল তিন বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন এবং একই বা একাধিক মেয়াদের জন্য পুনরায় নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন।'

রাষ্ট্রের মূল বিচার ব্যবস্থা থেকে এনএবি'র বিচার ব্যবস্থা আলাদা এবং সংস্থাটি নিজস্ব আদালত পরিচালনা করে। এর নিজস্ব তদন্তকারী দল এবং যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের লাগামহীন ক্ষমতা রয়েছে। এমনকি গ্রেপ্তারকৃতদের আটকে রাখার জন্য আলাদা কারাগারও রয়েছে। যার সব কিছুই পাকিস্তানের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত।

২০১৩ সালে এনএবি বিপুল সংখ্যক তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় এবং ইসলামাবাদের COMSATS বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়। চাকরির বাইরে ৭ মাস এবং চাকরিরত অবস্থায় ২ মাসের প্রশিক্ষণ সফলভাবে সমাপ্ত করার পরে, দেশের বিভিন্ন কার্যালয়ে তাদের পদায়ন করা হয়।

পাকিস্তানের আইন মন্ত্রণালয়ের মতে, এনএবি'র দায়িত্ব হল বলপ্রয়োগ, প্রসিকিউশন, সচেতনতা এবং প্রতিরোধের মাধ্যমে দুর্নীতি দূর করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য একটি আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।

তদন্ত এবং পরবর্তী বিচারকার্যে কয়েক মাস সময় এমনকি বছর গড়াতে পারে এবং বিচারকার্য শেষ হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের আটকে রাখতে পারে এনএবি।

পাকিস্তানের অধিকাংশ পাবলিক রেকর্ড এখনো ইলেকট্রনিকভাবে আর্কাইভ না করা বা কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে সংযুক্ত না করার কারণে বিচারযোগ্য প্রমাণ সংগ্রহে অসুবিধা এবং ধীরগতির বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে এনএবি'র কার্যক্রম এখনো বেশ চ্যালেঞ্জিং।

তদন্ত ও অর্জন
এনএবি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সংস্থাটি ৪ হাজার ৭৪৭টি তদন্ত পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে আদালতে ৩ হাজার ৫৩৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলার ফলস্বরূপ ১ হাজার ১৯০টি মামলায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, ৭৭১টি মামলা খালাস হয়েছে এবং ১০০ মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এনএবি সূত্রে আরও জানা যায়, সৃষ্টির পর থেকে সংস্থাটি দেশের অভিজাত রাজনীতিবিদ, আমলা, প্রাক্তন সামরিক অফিসার এবং কর্পোরেট অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দ্বারা সংঘটিত দুর্নীতি থেকে ২৪০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির বা প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পুনরুদ্ধার করেছে।

২০২০ সালে ইমরান খানের আমলে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে গ্রেপ্তার করে বেশ কয়েক মাস আটকে রেখেছিল এনএবি। এ ছাড়াও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সকল প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে তদন্ত, বিচার এবং কারাগারে পাঠিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী এই সংস্থাটি।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ২০১৮ সালে এনএবি আদালতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে অবশ্য একটি উচ্চ আদালত মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে হওয়া রায় বাতিল করেন।

বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং সর্বোচ্চ আদালতের ভর্ৎসনা
শুরু থেকেই সংস্থাটির কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। প্রধানত এর লাগামহীন ক্ষমতার এবং যে কোনো ব্যক্তিকে তদন্ত করে কলঙ্কিত করলেও পরে তাদের নির্দোষ বলার কারণে।

কাগজে-কলমে এনএবি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং রাজনীতিবিদদের মতে, সংস্থাটিকে প্রায়ই দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিরোধী দলকে দমন করার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যদিও, ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে এনএবি।

যদিও দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সবাই একমত। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, সে দিক থেকে সংস্থাটির খুব বেশি সাফল্য নেই। বরং এনএবি'র তদন্তের ভয় এত বেশি যে সরকারি কর্মকর্তারা প্রকল্পগুলো স্বচ্ছ রাখতে কাজে ধীরগতির অবতারণা করেন।

আইন অনুযায়ী সংস্থাটি শুধুমাত্র সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে। তবে পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে যে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত এবং বিচার চালিয়েছে এনএবি।

অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনার কারণে সুপ্রিম কোর্ট একাধিকবার সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজা 'দর কষাকষি' করার জন্য সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে 'প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি' বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজার 'দর কষাকষি' মন্তব্য সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলেন, সংস্থাটি প্রথমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা করে। তদন্ত ও বিচার থেকে পরিত্রাণ পেতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে এনএবি দ্বারা নির্ধারিত 'খরচ' দিতে হয়।

আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন বিচারপতি খাজা আরও বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, কিছু এনএবি কর্মকর্তা প্রভাবশালী সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের আগে সতর্ক করে দেয় যাতে তারা পালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়।

গেল মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে তুলে নিয়ে যায় এনএবি। বিষয়টিকে বেআইনি ঘোষণা করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এনএবি'র এহেন কর্মকাণ্ডকে দেশের বিচারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বড় অসম্মান বলে মন্তব্য করেন দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। প্রধান বিচারপতি তার মন্তব্যে এনএবি-কে ভর্ৎসনা করে বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি যে ইমরান খানের গ্রেপ্তার বেআইনি ছিল' এবং একইসঙ্গে 'আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে না' বলে নির্দেশ দেন তিনি।

সংশোধনী
চলতি বছরের মার্চ মাসে, পিটিআই ব্যতীত দেশের সমগ্র রাজনীতিবিদরা সংস্থাটির ক্ষমতা সীমিত করার লক্ষ্যে আইন সংশোধন করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। পূর্বে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জামিনবিহীন ৯০ দিন পর্যন্ত আটকে রাখতে পারত এনএবি, বর্তমানে সে আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ সময়কাল করা হয়েছে ১৪ দিন। এ ছাড়া সংস্থাটিকে একটি মামলা এক বছরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

তবে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকলেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী যে পরোক্ষভাবে জড়িত এনএবি'র সীমাহীন ক্ষমতা তারই উদাহরণ এবং ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা ইস্যুতে আইএসপিআর-এর দেওয়া বিবৃতি সেদিকেই ইঙ্গিত করে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তথ্যসূত্র: জিও নিউজ, ডন, উইকিপিডিয়া এবং এনএবি'র সরকারি ওয়েবসাইট

/এএস

Header Ad
Header Ad

দাবানলের তাণ্ডব: ৬ দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সেজে লুটপাট

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল ছয় দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও আগুন নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ঝোড়ো বাতাসের পূর্বাভাসের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে আলাদা ছয়টি দাবানল শুরু হলেও বর্তমানে চারটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্যালিসেইডস দাবানল, যা ইতোমধ্যে ২২ হাজার একর পুড়িয়ে দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এই দাবানল মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। প্যালিসেইডস দাবানল সান্তা মোনিকা ও মালিবুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এটি ব্রেন্টউড ও সান ফার্নান্ডো এলাকাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।

এই দাবানলে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ৫৭ হাজার অবকাঠামোকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। এলাকা খালি করতে বলা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষকে, আর আরও ১ লাখ ৬৬ হাজার মানুষকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহেও সমস্যা হচ্ছে; যদিও বিদ্যুৎবিহীন গ্রাহকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।

এর মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সেজে লুটপাটের ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, যাঁদের মধ্যে দুজন ফায়ার সার্ভিসের পোশাক পরে লুটপাট করছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও দেশ থেকে সহায়তা নিচ্ছে। তবে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ছে।

Header Ad
Header Ad

এলিফ্যান্ট রোডে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম: তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। মূল টার্গেট ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালের ছোট ভাই ও কম্পিউটার ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল হাসান দিপু। তবে ভুলক্রমে হামলাকারীরা ব্যবসায়ী এহতেশামুল হককে গুরুতর আহত করে। ঘটনার নেপথ্যে মাল্টিপ্লান সেন্টারের ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব ও চাঁদাবাজি অন্যতম কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার রাতে মাল্টিপ্লান সেন্টারের সামনে এহতেশামুল হককে রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। একই সময় দিপুও আঘাতপ্রাপ্ত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাটি মাত্র দুই-তিন মিনিটের মধ্যে ঘটে। সন্ত্রাসীদের হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় আশপাশের কেউ ভয়ে এগিয়ে আসতে সাহস করেনি। হামলাকারীরা এহতেশামুলকে আহত করে সায়েন্সল্যাবের দিকে পালিয়ে যায়।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, এই হামলার মূল কারণ মাল্টিপ্লান ও আশপাশের ব্যবসায়ী সমিতিতে চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়া। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন, যিনি আগে এই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন, নতুন নেতৃত্বের কারণে তার আয় বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি দিপুকে হুমকি দেন এবং এই হামলার পরিকল্পনা করেন। গত ৫ আগস্ট দিপু নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ইমনের ক্ষোভ বাড়তে থাকে।

এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় হত্যা প্রচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ইমনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তকারীরা বলছেন, গ্রেফতার হওয়া আসামিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

এই হামলার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। মাল্টিপ্লানের ব্যবসায়ীরা শনিবার মানববন্ধন করে দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, সবদিক বিবেচনা করে তদন্ত চলছে, এবং দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

এইচএমপিভি প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা

ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) সংক্রমণ প্রতিরোধে সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং আক্রান্তদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

নির্দেশনাগুলো হলো:

১. মাস্ক ব্যবহার করা: শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে।
২. হাঁচি বা কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা: বাহু বা টিস্যু দিয়ে।
৩. ব্যবহৃত টিস্যু যথাযথভাবে ফেলা: ঢাকনাযুক্ত ঝুড়িতে ফেলে, সাবান-পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া।
৪. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা: অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা।
৫. ঘন ঘন হাত ধোয়া: সাবান-পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড।
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ না ধরা।
৭. উপসর্গ থাকলে বাড়িতে থাকা: জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়া এবং প্রয়োজনে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করা।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এইচএমপিভি ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ তৈরি করে, যা সাধারণত দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আবশ্যক।

বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। চীনসহ অন্যান্য দেশে এর প্রকোপের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী:

- ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু।
- ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তি।
- হাঁপানি বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত।
- অন্তঃসত্ত্বা নারী।
- দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি।

দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিমানবন্দর ও বন্দর স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এইচএমপিভি প্রতিরোধে সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। ব্যক্তিগত ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দাবানলের তাণ্ডব: ৬ দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সেজে লুটপাট
এলিফ্যান্ট রোডে দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম: তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এইচএমপিভি প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা
বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে ভারতের চার-পাঁচটা ড্রোনই যথেষ্ট: শুভেন্দু
বিপিএলে একই ম্যাচে লিটন ও তামিমের জোড়া সেঞ্চুরির দুর্দান্ত প্রদর্শনী
বৈজ্ঞানিক প্রকাশনায় দেশে শীর্ষে ঢাবি, দ্বিতীয় ড্যাফোডিল, তৃতীয় বুয়েট
উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ হাসিতে সিলেটের টানা দ্বিতীয় জয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হল থেকে আগুনে পোড়া কোরআন উদ্ধার, বিক্ষোভ
সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়ল আরও ৬০ দিন
‘অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করেনি’
রাবিতে কোরআন পুড়ানোর ঘটনায় ছাত্রদলের নিন্দা প্রকাশ
রাজউকের প্লট জালিয়াতি, শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নওগাঁয় নগদ ৪ লক্ষ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট, অভিযোগের তীর প্রতিবেশির দিকে
বিরামপুরে অগ্নিকাণ্ড ৩টি দোকান পুড়ে ছাই
ইংল্যান্ডে দুপুরের খাবারসহ বিনা টিকিটে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখেছেন টিউলিপ: টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন
প্রতিযোগী থেকে বিয়ের পিড়িতে পড়শী-নিলয়
‘জমজমের’ বলে ট্যাপের পানি বিক্রি, আয় করেছেন ৩০ কোটি!
কাউন্সিল নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত
বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ হাইকোর্টের
ঢাবিতে ছাত্রীহল নির্মাণ ও সংস্কারের দাবি ছাত্রদলের