বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পাকিস্তান এনএবি'র 'সীমাহীন ক্ষমতা' ও 'বিতর্কিত কর্মকাণ্ড'

ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো বা এনএবি। বিশ্বব্যাপী এই নামটি এখন ব্যাপক আলোচিত। সম্প্রতি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে রাজধানীর ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করার পর আলোচনায় উঠে এসেছে এনএবি'র নাম। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এনএবি কী, তাদের কাজ কী এবং তারা কতটা শক্তিশালী।

শুরুর কথা
এনএবি গঠন করা হয় ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর। সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফের হাত ধরে এই সংস্থার যাত্রা শুরু। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের বিনাশ ঘটাতে গঠিত এ সংস্থার প্রধান (চেয়ারম্যান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান। এটি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা। স্বায়ত্তশাসিত এ সংস্থার সদরদপ্তর অবস্থিত রাজধানী ইসলামাবাদে এবং করাচি, লাহোর, পেশোয়ার, কোয়েটা, রাওয়ালপিন্ডি, মুলতান ও শুক্কুর শহরে এর আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠাকালে এনএবি চেয়ারম্যান ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ আমজাদ। বর্তমানে এনএবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাজির আহমেদ ভুট্টো। তিনি ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান এবং ২০২৩ সালের ৪ মার্চ চেয়ারম্যান হিসেবে এনএবিতে যোগদান করেন। যদিও এনএবি'র সরকারি ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া নেই, তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন চৌকস ও জাঁদরেল কর্মকর্তা।

উন্মুক্ত জ্ঞানকোষ উইকিপিডিয়া থেকে জানা গেছে, এনএবি গঠনের পর মোশাররফ বলেছিলেন, ''আমি ক্ষমতায় আসার আগে পাকিস্তান 'ব্যর্থ রাষ্ট্র' ঘোষিত হবার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তাই দুর্নীতিবাজদের মধ্যে ঈশ্বরের ভয় টিকিয়ে রাখতে এনএবি গঠন করা হয়েছে।''

কাজের ধরন এবং ক্ষমতা
এনএবি'র কার্যপদ্ধতিতে দুইজন প্রধান ব্যক্তি রয়েছেন। একজন চেয়ারম্যান, যিনি সকল অনুসন্ধান ও পুরো কার্যপদ্ধতির তদারকি করেন এবং অপরজন একজন প্রধান আইন কর্মকর্তা (প্রসিকিউটর জেনারেল), যিনি অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ সকল বিচারকার্য পরিচালনা করেন। প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। চেয়ারম্যানের মেয়াদকাল ৪ বছর এবং প্রসিকিউটর জেনারেলের মেয়াদকাল ৩ বছর।

বর্তমানে এনএবি'র প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লাহোর হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি সৈয়দ আসগর হায়দার। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম 'ডন' সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ আসগর ২০১৮ সালে এনএবি'র প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। তিন বছরের মেয়াদকাল শেষে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে পুনরায় প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

এনএবি'র অধ্যাদেশে উল্লেখ ছিল 'মেয়াদ বৃদ্ধি হবে না শর্তে একজন প্রসিকিউটর জেনারেল কেবল এক মেয়াদকাল দায়িত্ব পালন করতে পারবেন'। তবুও তার মেয়াদকাল বৃদ্ধি হওয়ায় তখন ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। তবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ড. আরিফ আলভি একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে উল্লিখিত বিধানটি সংশোধন করেন। সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুসারে, 'প্রসিকিউটর জেনারেল তিন বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন এবং একই বা একাধিক মেয়াদের জন্য পুনরায় নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন।'

রাষ্ট্রের মূল বিচার ব্যবস্থা থেকে এনএবি'র বিচার ব্যবস্থা আলাদা এবং সংস্থাটি নিজস্ব আদালত পরিচালনা করে। এর নিজস্ব তদন্তকারী দল এবং যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের লাগামহীন ক্ষমতা রয়েছে। এমনকি গ্রেপ্তারকৃতদের আটকে রাখার জন্য আলাদা কারাগারও রয়েছে। যার সব কিছুই পাকিস্তানের সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত।

২০১৩ সালে এনএবি বিপুল সংখ্যক তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় এবং ইসলামাবাদের COMSATS বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়। চাকরির বাইরে ৭ মাস এবং চাকরিরত অবস্থায় ২ মাসের প্রশিক্ষণ সফলভাবে সমাপ্ত করার পরে, দেশের বিভিন্ন কার্যালয়ে তাদের পদায়ন করা হয়।

পাকিস্তানের আইন মন্ত্রণালয়ের মতে, এনএবি'র দায়িত্ব হল বলপ্রয়োগ, প্রসিকিউশন, সচেতনতা এবং প্রতিরোধের মাধ্যমে দুর্নীতি দূর করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য একটি আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা।

তদন্ত এবং পরবর্তী বিচারকার্যে কয়েক মাস সময় এমনকি বছর গড়াতে পারে এবং বিচারকার্য শেষ হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের আটকে রাখতে পারে এনএবি।

পাকিস্তানের অধিকাংশ পাবলিক রেকর্ড এখনো ইলেকট্রনিকভাবে আর্কাইভ না করা বা কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে সংযুক্ত না করার কারণে বিচারযোগ্য প্রমাণ সংগ্রহে অসুবিধা এবং ধীরগতির বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে এনএবি'র কার্যক্রম এখনো বেশ চ্যালেঞ্জিং।

তদন্ত ও অর্জন
এনএবি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সংস্থাটি ৪ হাজার ৭৪৭টি তদন্ত পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে আদালতে ৩ হাজার ৫৩৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলার ফলস্বরূপ ১ হাজার ১৯০টি মামলায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, ৭৭১টি মামলা খালাস হয়েছে এবং ১০০ মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এনএবি সূত্রে আরও জানা যায়, সৃষ্টির পর থেকে সংস্থাটি দেশের অভিজাত রাজনীতিবিদ, আমলা, প্রাক্তন সামরিক অফিসার এবং কর্পোরেট অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দ্বারা সংঘটিত দুর্নীতি থেকে ২৪০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির বা প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পুনরুদ্ধার করেছে।

২০২০ সালে ইমরান খানের আমলে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে গ্রেপ্তার করে বেশ কয়েক মাস আটকে রেখেছিল এনএবি। এ ছাড়াও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সকল প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে তদন্ত, বিচার এবং কারাগারে পাঠিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী এই সংস্থাটি।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ২০১৮ সালে এনএবি আদালতে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে অবশ্য একটি উচ্চ আদালত মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে হওয়া রায় বাতিল করেন।

বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং সর্বোচ্চ আদালতের ভর্ৎসনা
শুরু থেকেই সংস্থাটির কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। প্রধানত এর লাগামহীন ক্ষমতার এবং যে কোনো ব্যক্তিকে তদন্ত করে কলঙ্কিত করলেও পরে তাদের নির্দোষ বলার কারণে।

কাগজে-কলমে এনএবি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং রাজনীতিবিদদের মতে, সংস্থাটিকে প্রায়ই দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিরোধী দলকে দমন করার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যদিও, ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে এনএবি।

যদিও দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সবাই একমত। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, সে দিক থেকে সংস্থাটির খুব বেশি সাফল্য নেই। বরং এনএবি'র তদন্তের ভয় এত বেশি যে সরকারি কর্মকর্তারা প্রকল্পগুলো স্বচ্ছ রাখতে কাজে ধীরগতির অবতারণা করেন।

আইন অনুযায়ী সংস্থাটি শুধুমাত্র সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে। তবে পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে যে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত এবং বিচার চালিয়েছে এনএবি।

অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনার কারণে সুপ্রিম কোর্ট একাধিকবার সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজা 'দর কষাকষি' করার জন্য সংস্থাটির সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে 'প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি' বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিচারপতি জাওয়াদ এস খাজার 'দর কষাকষি' মন্তব্য সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলেন, সংস্থাটি প্রথমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা করে। তদন্ত ও বিচার থেকে পরিত্রাণ পেতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে এনএবি দ্বারা নির্ধারিত 'খরচ' দিতে হয়।

আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন বিচারপতি খাজা আরও বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, কিছু এনএবি কর্মকর্তা প্রভাবশালী সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের আগে সতর্ক করে দেয় যাতে তারা পালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়।

গেল মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে তুলে নিয়ে যায় এনএবি। বিষয়টিকে বেআইনি ঘোষণা করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এনএবি'র এহেন কর্মকাণ্ডকে দেশের বিচারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বড় অসম্মান বলে মন্তব্য করেন দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। প্রধান বিচারপতি তার মন্তব্যে এনএবি-কে ভর্ৎসনা করে বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি যে ইমরান খানের গ্রেপ্তার বেআইনি ছিল' এবং একইসঙ্গে 'আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে না' বলে নির্দেশ দেন তিনি।

সংশোধনী
চলতি বছরের মার্চ মাসে, পিটিআই ব্যতীত দেশের সমগ্র রাজনীতিবিদরা সংস্থাটির ক্ষমতা সীমিত করার লক্ষ্যে আইন সংশোধন করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। পূর্বে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জামিনবিহীন ৯০ দিন পর্যন্ত আটকে রাখতে পারত এনএবি, বর্তমানে সে আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ সময়কাল করা হয়েছে ১৪ দিন। এ ছাড়া সংস্থাটিকে একটি মামলা এক বছরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

তবে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকলেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী যে পরোক্ষভাবে জড়িত এনএবি'র সীমাহীন ক্ষমতা তারই উদাহরণ এবং ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক সহিংসতা ইস্যুতে আইএসপিআর-এর দেওয়া বিবৃতি সেদিকেই ইঙ্গিত করে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

তথ্যসূত্র: জিও নিউজ, ডন, উইকিপিডিয়া এবং এনএবি'র সরকারি ওয়েবসাইট

/এএস

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশে এখনো ক্রান্তিকাল বিদ্যমান: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালেও বাংলাদেশ এখনো ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। প্রশাসনের অভ্যন্তরে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে যশোরে বিএনপির প্রয়াত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশের সংস্কার চায়। তবে শুধু শব্দ বা ভাষার পরিবর্তন নয়, এমন সংস্কার চাই যা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনবে। তিনি মনে করেন, মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই সংস্কারের পথ চলা থামানো উচিত নয়। রাজনীতির মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, আর বিএনপি তার ৩১ দফার মাধ্যমে এ সংগ্রামে প্রতিটি নাগরিকের জন্য কাজ করছে।

তারেক রহমান প্রয়াত তরিকুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি সারাজীবন মা-মাটি-মানুষের জন্য নিবেদিত ছিলেন। নতুন প্রজন্মকে তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যারা রাজনীতিকে ব্যক্তিগত লাভের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন, তাদের পতন এ জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। তারেক আরো বলেন, ছাত্র-জনতার মহাবিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার উৎখাত হয়েছে, কিন্তু তাদের সহযোগী ও প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, ভুল বোঝাবুঝি দূর করে গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কেবল সংবিধানের কিছু শব্দের পরিবর্তনে সংস্কার সম্ভব নয়, বরং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যই বিএনপি এই ৩১ দফা প্রস্তাবনা সামনে এনেছে এবং দলটি সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।

তরিকুল ইসলামের আদর্শ ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, তিনি কখনো নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে ও পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেনের সময়েও তিনি কারাভোগ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তরিকুল ইসলামের সাথে কারাগারে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, সেই সময় তিনি তরিকুল ইসলামের কাছ থেকে অনেক সাহস পেয়েছিলেন।

স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া মরহুম তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী ও বিএনপি নেত্রী নার্গিস বেগম এবং তাঁর দুই সন্তান শান্তুনু ইসলাম সুমিত ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

Header Ad

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হবে। পরীক্ষা চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি উপ-কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে রাবি ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুরে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০২৫ সালের ১২, ১৯ ও ২৬ এপ্রিল তারিখে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

১৪ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি কমিটির সভায় এই সুপারিশ বিবেচনা করা হবে। ঐ সভায় ভর্তি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিত বলা হয়েছে।

Header Ad

আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক মাস যাবৎ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিম আক্তার ( ১৭) নামের এক গৃহবধুর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়াচ্ছিলেন হেলাল উদ্দিন সরদার নামের ( ২৭) এক যুবক।

আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ৪নভেম্বর (সোমবার ) রাতে অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মিম আক্তার। পরে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম। মীম আক্তার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে। আর অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদার একই এলাকার আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদার এর ছেলে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদারের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল উদ্দিন সরদার এর সাথে একই এলাকার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে মিম আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের ৭মাসের মাথায় পারিবারিক কলহের জেরে গত ৭জুলাই দু’জনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর থেকেই হেলাল “মিম আক্তার” শিরোনামে একটি ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে মিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করতে থাকে। শুধু ফেসবুকই নয় হোয়াইটস অ্যাপস সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মিমের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করে। এমনকি মিমের হোয়াইস আ্যপে এসব ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে তাকে উত্যক্ত করে হেলাল । পরে মিম তার ব্যবহৃত ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে। ঘটনাটি পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে অভিমান করে সোমবার রাত ৮টার দিকে বিষ পান করে (পোকামাকড় নিধনের বিষ) আত্নহত্যা করার চেষ্টা করে। পরে পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়রা উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম।

মিমের বাবা আসাদুল প্রামানিক বলেন, আমার মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকেই হেলাল নানাভাবে বিরক্ত ও উত্যক্ত করে আসছিল। তার নামে ফেসবুক আইডি খুলে নানা রকম ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতো। আমার মেয়েকেও হোয়াইটস অ্যাপে সেসব দিয়ে ভয়ভূতি ও হুমকি দিয়ে বলতো তোর জীবন শেষ করে দিবো। এসব জানাজানি হলে আমার মেয়ে সবার অজান্তে ঘরে বিষ খায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মেয়েটা মারা যায়। এসব ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে আমার মেয়েকে আত্নহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। অপমান ও অভিমানে মেয়েটা আত্নহত্যা করেছে। হেলালসহ যারাই জড়িত থাক,তাদের সবার কঠিণ শাস্তি চাই। আমরা থানায় মামলা করবো।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদারের পরিবারের লোকজন। গ্রামের বাড়ি আঁকনাতে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল এর সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টাও তা সম্বব হয়নি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফজলুল হক নয়ন বলেন, মিম বিষ পান করার পর বেশ কয়েক ঘন্টা পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা প্রদান করেছি। পরবর্তীতে রাজশাহী বা বগুড়া নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলাম। তবে এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) তারিকুল ইসলাম বলেন, মালশন গ্রামের মিম আক্তার নামের একজন বিষপান করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবস্থান মারা গেছেন। যেতেতু নওগাঁ সদর হাসপাতালে মারা গেছেন যার কারনে সদর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশে এখনো ক্রান্তিকাল বিদ্যমান: তারেক রহমান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় গৃহবধূর আত্মহত্যা
সম্মেলন শেষে ঢাবি পরিচ্ছন্নতা অভিযান করেছে তাবলিগের সাথীরা
বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হলেন সালাহউদ্দিন
আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা