‘নিষ্ঠুরতা’ বন্ধ করলেই সংলাপ: জেনারেল হেমেদি
সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ২০২১ সালে সুদানে অভ্যুত্থান ঘটে। সেই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন দেশটির প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। তাঁকে উৎখাতের পর দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল থেকে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫১২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ১৯৩ জন। এর জন্য দেশটির সামরিক বাহিনী ও সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানকে দায়ী করেছেন আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো, যিনি জেনারেল হেমেদি নামেই বেশি পরিচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনী ‘নিষ্ঠুরতা’ বন্ধ করলেই কেবল শান্তি সংলাপ শুরু করা সম্ভব।
শুক্রবার বিবিসিকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরএসএফের এই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও আরএসএফ যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বোমা ও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনী।
তিনি বলেন, ‘আমরা সুদানকে ধ্বংস করতে চাই না। তারা (সেনাবাহিনী) নিষ্ঠুরতা বন্ধ করুক; আমরা শান্তি সংলাপে বসব।’
জেনারেল হেমেদি আরও বলেন, জেনারেল বুরহানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা নেই। তবে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের ঘনিষ্টদের সঙ্গে জেনারেল বুরহানের ব্যাপক ঘনিষ্টতা এবং তাদেরকে সরকারে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টার কারণে বুরহানকে এখন বিশ্বাসঘাতক মনে করেন তিনি।
জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট বশিরের বিদায়ের পর দেশটিকে পরিচালনা করে আসছে ‘সভরিন কাউন্সিল (সার্বভৌম পরিষদ) নামের একটি পরিষদ। আর এই পরিষদের প্রেসিডেন্ট সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল বুরহান এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট আরএসএফের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। তারা ২০২১ সালে একটি চুক্তি বাতিল করে দেন। সেই চুক্তির আওয়তায় ছিল দেশটিতে বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা এবং আরএসএফের এক লাখ সদস্যকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা।
বিবিসিকে জেনারেল হেমেদি জানান, সেনাপ্রধান জেনারেল বুরহানও ওমর আল বশিরের পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, বুরহানকে চালাচ্ছে কট্টরপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলো। তিনি তাদের স্বার্থকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন।’
এ সময় যুদ্ধরত সেনাসদস্যদের উদ্দেশে জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো বলেন, ‘আরএসএফ সদস্যরা সেনাবাহিনীর শত্রু ছিল না। সংকটকালে দেশকে রক্ষায় সেনাবাহিনী ও আরএসএফ কাঁধে কাঁধ লিয়ে লড়াই করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব না। দয়া করে আপনারা নিজ নিজ ডিভিশনে চলে যান, আমরা আপনাদের সঙ্গে লড়াই করব না।’
এদিকে চলমান এই সহিংসতা ঠেকাতে প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের কূটনৈতিক চেষ্টায় গত বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দেশটিতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সংকট নিরসনে প্রাথমিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান।
এসআইএইচ