চীনকে মোকাবিলায় ক্ষেপণাস্ত্রে ঝুঁকছে অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়া নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। তাই চীনকে মোকাবিলায় ক্ষেপণাস্ত্রে ঝুঁকছে।
চীনের দিক থেকে ক্রমে বাড়তে থাকা নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
দেশটির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। সতর্ক করা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের এ যুগে অস্ট্রেলিয়া যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারলে সুরক্ষিত থাকবে না।
গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলোর জন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকার প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার ব্যয় করবে।
সংবাদমাধ্যম এএফপির বরাতে বলা হচ্ছে, ১১০ পৃষ্ঠার এ প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা প্রতিবেদনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা খাতের সবচেয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ আছে।
প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা প্রতিবেদনটির শিরোনাম ‘দ্য ডিফেন্স স্ট্র্যাটেজিক রিভিউ’ (ডিএসআর)। প্রতিবেদনটি এমন সময়ে প্রকাশ করা হলো, যখন তাইওয়ান নিয়ে চীনের তৎপরতায় আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে এবং চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন স্বশাসিত দ্বীপটি প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে দখলের কথা বলছে চীন।
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা নৌবাহিনী তাদের অবস্থান সংহত করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে সাগরের একটি অংশ নিজেদের বলে দাবি করছে।
প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে চীনের সামরিক অবস্থান সংহত করা হচ্ছে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি গতিতে। সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ব্যাপারে দেশটি বেশ উচ্চাভিলাষী।’ প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কী করতে হবে, সে জন্য অপেক্ষার বদলে এ পর্যালোচনা আমাদের ভবিষ্যৎ রূপরেখা ঠিক করে দেবে। এর সুপারিশ অস্ট্রেলিয়াকে আরও আত্মনির্ভরশীল, সজাগ ও নিরাপদ করে তুলবে।’
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ পর্যালোচনা প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে স্থলভিত্তিক যুদ্ধাস্ত্রের পরিবর্তে দূরপাল্লার আক্রমণে সক্ষমতা অর্জনের দিকে মনোযোগী হওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। আমাদের এমন একটি প্রতিরক্ষা বাহিনী থাকা প্রয়োজন, যারা দূরে সফলভাবে হামলা চালাতে সক্ষম।’
অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে এ লক্ষ্য অর্জনে কাজ শুরু করেছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২২০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিনে ব্যবহার করবে অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ‘অকাস’ চুক্তির আওতায় এসব ক্ষেপণাস্ত্র পাচ্ছে দেশটি।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের (এএসপিআই) নিরাপত্তা বিশ্লেষক ম্যালকম ডেভিস বলেন, ‘তাইওয়ান অথবা দক্ষিণ চীন সাগরে চীন সামরিক শক্তি ব্যবহার করে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য যাতে অর্জন করতে না পারে, আমরা সে চেষ্টা চালাচ্ছি।’
এমএমএ/