ধূমপান ছাড়তে বিনামূল্যে ১০ লাখ ই-সিগারেট দিচ্ছে ব্রিটেন
ব্রিটেনে ধূমপানের পরিবর্তে ভেপিংয়ে উৎসাহী করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। ধূমপায়ীদের ধূমপানের পরিবর্তে ভেপিং বেছে নিয়ে আর্থিক প্রণোদনাও দেওয়া হবে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছে গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল)।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির ১০ লাখ ধূমপায়ীকে বিনামূল্যে ভেপিং সরবরাহ করা হবে ধূমপান ছাড়ার জন্য।
ইংল্যান্ডে বর্তমানে জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ ধূমপায়ী। ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার পাঁচ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ধূমপানের পরিবর্তে ভেপিংয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে দেশটিতে।
দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের প্রতি পাঁচজনের একজন ধূমপায়ীকে ই-সিগারেট বা ভেপ দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি ধূমপান ছাড়তে বিভিন্ন পরামর্শ, সহযোগিতাও দেওয়া হবে। চলতি বছরের শেষ দিকে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষকেও এই উদ্যোগে সম্পৃক্ত করা হবে।
মঙ্গলবার এই কার্যক্রমের উদ্ভোধন করে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেইল ও’ব্রায়েন বলেন, বিশ্বে ভেপিংয়ে উৎসাহিত করে ধূমপান ছাড়ানোর এমন উদ্যোগ ইংল্যান্ডেই প্রথম নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নিয়মিত সিগারেট সেবন করেন- এমন প্রতি তিনজন ধূমপায়ীর মধ্যে দুজনই ধূমপানজনিত নানা অসুখে ভুগে মারা যান। সিগারেট হচ্ছে বাজারে বিক্রি হওয়া একমাত্র পণ্য, যা নিশ্চিতভাবে আপনাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।
ও’ব্রায়েন ধূমপানের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছরের থেকে বাড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। বরং তাদের সরকার নীতিগতভাবে ধূমপান ছাড়ার সহায়ক উপায়ের দিকেই ঝুঁকছেন বলে জানান।
এ ছাড়া সিগারেটের প্যাকেটে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা ও জনগণকে ধূমপানে নিরুৎসাহিত করতেও কোম্পানিগুলোকে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির (পূর্বের পাবলিক হেলথ অব ইংল্যান্ড) গবেষণায় ভেপিং সাধারণ সিগারেটের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ব্রিটেনে দিন দিন ই-সিগারেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে ধূমপান হ্রাস এবং ধূমপান ছাড়ার বেলায় সহায়ক বিকল্প হিসেবে ভেপিংয়ের কার্যকরিতা প্রমাণ করতে চাচ্ছে সরকার।
জনসংখ্যা ও আয়তনের বিচারে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় রাজ্য ইংল্যান্ডে আপাতত এই প্রকল্প চালু হবে। পরে ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডেও এটি শুরু করার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
গর্ভবতী নারীদের ধূমপান ছাড়াতে পারলে গর্ভপাত এবং মৃতশিশু জন্মের হার অনেক কমে যাবে বলে আশা করছে সরকার। পাশপাশি কম ওজন নিয়ে শিশু জন্মও কমে যাবে।
এনএইচবি/এসজি