নওগাঁয় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হওয়ার ২২ দিন পর মারা গেছেন সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল মজিদ (৪৮)। গতকাল সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে নওগাঁ শহরের সাহাপুর এলাকায় নিজ বাসভবন থেকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
গত ২ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে শহরের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদকে গুলি করে। এ সময় মজিদের দুই ভাই কাবিল হোসেন ও শফিকুল ইসলাম এবং স্থানীয় সুবিদ আলী হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাঁদেরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনার পর থেকে গুলিবিদ্ধ আব্দুল মজিদ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর এলাকায় মোহাম্মদ আলী নামে আওয়ামী লীগের এক নেতার দখলে থাকা জমি উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদের সঙ্গে বিরোধে সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে গত ২ নভেম্বর রাতে শহরের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় বোয়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আব্দুল মজিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত আব্দুল মজিদকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিৎকিসা দেওয়ার লক্ষ্যে স্বজনেরা গতকাল সোমবার সকালে তাঁকে নওগাঁয় নিজের বাসায় নিয়ে আসেন। বাড়িতে আসার পর গতকাল রাতেই তাঁর শারিরীক অসুস্থতা বেড়ে যায়। সংকটাপন্ন অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১টার দিকে মজিদের মৃত্যু হয়। আহত হওয়ার ২২ দিন পর যুবদল নেতা মজিদের মৃত্যু হলো। আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাদ জোহর গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে সাহাপুর এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলুসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত আব্দুল মজিদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকেলে গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার এজহারভুক্ত আসামি আরিফ দেওয়ানসহ এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলীসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।