পুতিন ও শি’র আলোচনায় ইউক্রেন প্রাধান্য পায়
ভ্লাদিমির পুতিন এবং শি জিনপিং মঙ্গলবার (২১মার্চ) দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বসবেন। আন্তর্জাতিকভাবে কিছুটা বিচ্ছিন্ন রাশিয়ান নেতা বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধের বিষয়ে চীনের প্রস্তাব নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনার করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।
হেগের একটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইউক্রেনের শিশুদের বেআইনিভাবে নির্বাসনের অভিযোগে রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি জারি করার কয়েকদিন পরে মস্কোতে শি’র তিন দিনের সফর পুতিনের জন্য একটি বিরাট বিজয়।
সোমবার (২০ মার্চ) পুতিন এবং শি, একে অপরকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করে আড়াই ঘন্টাব্যাপী আলোচনা করেছেন।
পুতিন আলোচনার পরে শিকে তার গাড়িতে নিয়ে যান এবং দু’জনকে একসঙ্গে হাসতেও দেখা যায়। বৈঠকের সময় রাশিয়ান নেতা বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনের বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহী এবং সংঘাতের বিষয়ে বেইজিংয়ের ১২-দফা প্রস্তাবের প্রশংসা করেছেন।
যার মধ্যে সংলাপ এবং সমস্ত দেশের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মানের আহ্বান রয়েছে। চীন নিজেকে একটি নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে, কিন্তু ওয়াশিংটন সতর্ক করেছে বেইজিংয়ের পদক্ষেপের দ্বারা বিশ্বকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়। যা মস্কোকে সাহায্য করার জন্য একটি ‘অচল কৌশল’ হতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, চীনা নেতার মস্কো সফর ‘ইঙ্গিত করে ইউক্রেনের প্রতি সংঘটিত নৃশংসতার জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জবাবদিহি করার জন্য চীন কোনো দায় বোধ করে না।’
তিনি বলেন, ‘এমনকি নিন্দা করার পরিবর্তে, এটি রাশিয়াকে সেই ভয়ংকর অপরাধগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য কূটনৈতিক আবরণ প্রদান করবে।’
সরকারি চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, শি সোমবার পুতিনকে বলেছিলেন, চীন ইউক্রেন সংকটের ‘রাজনৈতিক নিষ্পত্তির জন্য একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।’
যুক্তরাষ্ট্রও বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মস্কোতে অস্ত্র রপ্তানি শুরুর অভিযোগ এনেছে। অবশ্য চীন এই দাবি অস্বীকার করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘তিনি শি’র
সঙ্গে আলোচনাকে স্বাগত জানাবেন, যদিও সোমবার এটি স্পষ্ট নয় যে চীনা নেতা মস্কো সফরের পরে তার সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করেছিলেন কি না।’
কিয়েভ সোমবার বলেছে, তারা আশা করেছিল, ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণের অবসান ঘটাতে বেইজিংয়ের প্রভাব ব্যবহার করবে শি এবং তারা গভীরভাবে এই সফরের বিষয়ে নজর রেখেছে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় চীনের এক সময়ের তিক্ত শত্রু মস্কো এবং বেইজিং বিগত বছরগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে কারণ, উভয়ই বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্যে ভারসাম্য ফেরাতে কাজ করছে।
ইউক্রেনের বিষয়ে বেইজিংয়ের অবস্থান পশ্চিমা দেশগুলো সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, চীন মস্কোর সশস্ত্র হস্তক্ষেপকে স্পষ্টভাবে সমর্থন করছে।
সোমবার তাদের আলোচনার সময়, রাশিয়ান নেতা বলেছিলেন, দুই দেশের ‘অনেক অভিন্ন উদ্দেশ এবং স্বার্থ রয়েছে। যেখানে শি ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’কে স্বাগত জানিয়েছেন।
পশ্চিমা দেশগুলো যুক্তি দিয়েছে, চীনের প্রস্তাবগুলো বাস্তব সমাধানেরর জন্য যথেষ্ঠ নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে বলেছিল, চীনের প্রস্তাবগুলো কেবল ‘রাশিয়ান বিজয়’ নিশ্চিত করবে এবং ক্রেমলিনকে নতুন আক্রমণে যাওয়ার উপায় বের করে দেবে।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি শুক্রবার বলেছেন, ‘আমরা এখনই যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করি না।’
এমএমএ/