বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করল আফগান সরকার
আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন থেকে আর কোনো নারী শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির বর্তমান শাসক তালেবান। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি বলছে, আফগান তালেবান শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে একটি চিঠি ইস্যু করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেই চিঠিতে জানিয়েছে, তাদের এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক কার্যকর করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না।
তালেবান ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে প্রথমে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এবার বন্ধ করে দিল নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ।
আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা হয় মাত্র তিন মাস আগে । সে সময় নারীদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে ওই সময় জানিয়ে দেওয়া হয়, নারীরা উদ্ভিদ বিদ্যা, ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি এবং কৃষি বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে পারবে না। আর বিশেষভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনো নারী সাংবাদিকতা পড়ার সুযোগ পাবে না।
গত বছর ক্ষমতা দখলের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করে তালেবান। এ ছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র নারী ও বৃদ্ধ প্রফেসররা লেকচার দিতে পারবেন এমন নিয়ম জারি করে।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ও শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
পরিচয় গোপন রেখে বিবিসিকে এক শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘তালেবান নারী ও তাদের শক্তিকে ভয় পায়। আমি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব? আমার বিশ্বাস ছিল আমি পড়ালেখা করে আমার ভবিষ্যৎ পরিবর্তন বা আমার জীবনে আলো আনতে পারব। কিন্তু এখন তারা সব ধ্বংস করে দিল’।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের শিক্ষা খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। গত বছর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের পর অনেক শিক্ষাবিদ দেশত্যাগ করেন।
জাতিসংঘের মার্কিন উপ-রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড তালেবানের সর্বশেষ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন।
গত নভেম্বরে, তালেবান সরকার রাজধানী কাবুলের পার্কগুলোতে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের দাবি, সেখানে ইসলামিক আইন মানা হচ্ছে না।
আরএ/