ইউরোপে ইউক্রেনের দূতাবাসগুলোতে ‘অদ্ভুত বাক্স’ প্রেরণ
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ইউক্রেনের দূতাবাসে অদ্ভুত এক ধরনের বাক্স পাঠিয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) স্পেনের মাদ্রিদে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাস একটি বাক্স পেয়েছে, যার মধ্যে পশুর চোখ রয়েছে।
ইউক্রেন ও স্পেনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, এই বাক্সগুলোর ভেতরটা ‘রক্তে ভেজা’ ছিল এবং বিভিন্ন প্রাণীর চোখ পাওয়া গেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, হাঙ্গেরি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া, স্পেনে ও চেক রিপাবলিকে রক্তে ভেজা বাক্স পাওয়া গেছে।
তবে কে বা কারা এসব বাক্স দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে পাঠিয়েছে তা নিশ্চিত নয় বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
আতঙ্ক ও ভয় সৃষ্টি করতে পরিকল্পিতভাবে এসব কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা।
মাত্র দুইদিন আগে স্পেনের মাদ্রিদে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাসে অজ্ঞাতরা পার্সেল বোমা পাঠিয়েছিল। ওই বোমা বিস্ফোরণে দূতাবাসের এক কর্মী আহত হয়েছিলেন।
স্পেনের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাফায়েল পারেজ সাংবাদিকদের জানান, সব চিঠির খাম এবং ভেতরের অংশ একই রকম ছিল। এ ছাড়া তারা ইঙ্গিত পেয়েছেন এগুলো স্পেনের ভেতর থেকেই পাঠানো হয়েছে। অধিকতর তদন্তের পরই জানা যাবে এগুলোর আসল রহস্য।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো শুক্রবার ফেসবুকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের দূতাবাসগুলোতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে। ভ্যাটিকানে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতের বাড়ির প্রবেশদ্বারে অজ্ঞাতরা ভাংচুর চালিয়েছে, কাজাখস্তানের দূতাবাসে বোমা হামলার আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে যেটিতে ইউক্রেনের সমালোচনা করা একটি আর্টিকেলের (প্রবন্ধের) ফটোকপি ছিল।
তিনি আরও জানিয়েছেন, অন্যান্য চিঠির সঙ্গে একইসময়ে এ চিঠি ইউরোপের একটি দেশ থেকে এসেছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে ও শাস্তির আওতায় আনতে বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইউক্রেন কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটে পাঠানো বাক্সগুলোতে একই ধরনের তরল বস্তু ও গন্ধ ছিল।
এসব ঘটনার পর দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিশেষ করে স্পেনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) স্পেনের একটি সামরিক সরঞ্জামের ফার্মে পার্সেল বোমা পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর বৃহস্পতিবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাদ্রিদের অদূরে অবস্থিত তোরেন দে আরদোজের বিমান ঘাঁটিতেও এই ধরনের বোমা পাঠানো হয়।
এসএন