শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি
শ্রীলঙ্কায় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিলেন তিনি। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি প্রদেশে কারফিউও জারি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বুধবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এদিকে এর কয়েক ঘণ্টা আগে অবশেষে সামরিক উড়োজাহাজে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। রাজাপক্ষের পালিয়ে যাওয়ার খবরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে রাজিকিয়া মাওয়াথা সড়কে বেরিয়ে আসেন এবং দেশটির পালার্মেন্টের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। এ দিকে এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৭৩ বছর বয়সী এই নেতা স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাত ৩টার দিকে মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছেছেন। এ সময় তার সঙ্গে স্ত্রী ও দুইজন নিরাপত্তা কর্মকতা ছিলেন বলে জানা গেছে।
তবে রাজাপক্ষে মালদ্বীপে থাকবেন না বলে একটি সূত্র বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে। তিনি অন্য কোনো দেশে চলে যাবেন বলে জানানো হয়েছে।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের ভাই ও সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপক্ষেও দেশ ছেড়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
এর মধ্যে দিয়ে কয়েক দশক ধরে শ্রীলঙ্কার ক্ষমতায় থাকা রাজাপক্ষে পরিবারের পতন হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত শনিবার বিক্ষোভকারীরা বাসভবনে ঢুকে পড়ার পর থেকেই পালিয়ে ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। পালানো অবস্থাতেই ঘোষণা দেন বুধবার (১৩ জুলাই) পদত্যাগ করবেন তিনি।
প্রেসিডেন্টের দেশ ছাড়ার খবর সামনে আসার পর বিক্ষোভকারীদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। রাজধানী কলম্বোয় বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রস্থল গলে ফেস গ্রিন পার্কে মঙ্গলবার বিকেল থেকে যোগ দিতে থাকেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।
দেশটিতে চলতে থাকা অর্থনৈতিক সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের পরিবারকে দায়ী করছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। গত কয়েক মাস ধরেই এসব মানুষ দীর্ঘ লোডশেডিং, জ্বালানি, খাবার ও ওষুধের সংকটে ভুগছে।
দায়িত্বে থাকা অবস্থায় দায়মুক্তি পেয়ে থাকেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। সেই কারণে পদত্যাগের আগেই দেশ ছাড়তে চেয়েছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। নতুন প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে এ আশঙ্কায় ছিলেন তিনি।
এসএন