দ্যা গার্ডিয়ান'র অনুসন্ধান
ব্যবসা বিস্তারে উবারের প্রতারণা
যাতায়াত সহজ করতে রাইড শেয়ারিংয়ে বিশ্বব্যপী জনপ্রিয় প্ল্যাটফরম উবার। বর্তমানে বিশ্বের ৭২ টি দেশের ১০ হাজার ৫০০ টি শহরে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই পরিবহন কোম্পানিটির পরিষেবা চলমান রয়েছে। সম্প্রতি উবারের ১ লাখ ২৪ হাজার গোপন নথি পেয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান। প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে গার্ডিয়ান তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ব্যবসা বিস্তারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট, ধনকুবের, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহায়তা পেয়েছে উবার। ব্যবসা প্রসারে উবার বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ, আইন লঙ্ঘন, পুলিশের সঙ্গে প্রতারণা ও চালকদের শোষণ করেছে।
গার্ডিয়ান যেসব নথি পেয়েছে তার মধ্যে শীর্ষ কর্মকর্তাদের ই-মেইল, মোবাইল ফোন মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ, উবারের বিভিন্ন প্রেজেন্টেশন, নোটবুক এবং ইনভয়েস রয়েছে। নথিতে ৪০টি দেশে উবারের ব্যবসার তথ্য রয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটি যেসব কাজ করেছে, তার তথ্য রয়েছে ওইসব নথিতে।
ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস-এর (আইসিআইজে) মাধ্যমে বিশ্বের ৪০টি সংবাদমাধ্যমের ১৮০ জন সাংবাদিককে এসব নথি সরবরাহ করেছে গার্ডিয়ান। গার্ডিয়ান এসব নথির নাম দিয়েছে ‘উবার ফাইলস’।
গার্ডিয়ান বলছে, যেসব দেশে রাইড শেয়ারিং অবৈধ, সেসব দেশে ব্যবসা শুরুর আগে নতুন আইন করার ব্যবস্থা করেছে উবার। উবারের এই প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে যেসব রাজনীতিকের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর নামও রয়েছে। মাখোঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ অর্থমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি উবারকে সাহায্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে উবারের ব্যবসা বিস্তারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দুই উপদেষ্টা ডেভিড প্লুফ ও জিম মেসিনা। এই দুজন উবার কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।
'উবার ফাইলস' অনুযায়ী নেদারল্যান্ডসে ব্যবসা প্রসারে উবারকে সহায়তা করেন ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিলি ক্রোস। দেশটির প্রধানমন্ত্রীও এতে যুক্ত ছিলেন বলে জানায় গার্ডিয়ান। আর ব্রিটেনে উবারের ব্যবসা প্রসারে সাহায্য করেন জর্জ অসবর্ন ও সাজিদ জাভিদসহ অন্তত ছয় মন্ত্রী।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, উবার কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ যাতে স্পর্শকাতর তথ্য না পায় সেজন্য ‘কিল সুইচ’ ব্যবহারের আদেশ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। অন্তত ছয়টি দেশে তারা এ ধরনের নির্দেশনা দেন বলে নথিতে উঠে এসেছে।
/এএস