‘এক পরিবার এক টিকিট’ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পথে কংগ্রেস
ভারতের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল ভারতীয় কংগ্রেসে এবার আসতে পারে আমূল পরিবর্তন। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ ব্যবস্থা কার্যকর করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। এখন থেকে চালু হতে পারে ‘এক পরিবার এক টিকিট’ নিয়ম। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারে দলের হাইকমান্ড। সে ক্ষেত্রে সোনিয়া, রাহুল, প্রিয়াঙ্কার মধ্যে এবারের লোকসভা নির্বাচনে কেবল একজনকেই নির্বাচনী লড়াইয়ে দেখা যেতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম এই সময় এ খবর জানিয়েছে।
কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে পরিবারতন্ত্রের বিষয়গুলো সামনে তুলে ধরা হয়। নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহসহ বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা এটিকেই হাইলাইট করে বিভিন্ন সময়ে রাহুল, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও কংগ্রেস নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছেন, প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তবে এবার সব প্রশ্নের জবাব দিতে প্রস্তুত কংগ্রেস শিবির। দীর্ঘদিনের ট্র্যাডিশন ভেঙে কংগ্রেসে এবার ‘এক পরিবার এক টিকিট’ ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এমনই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে চলেছে কংগ্রেস।
প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি এবার রায়বেরিলি থেকে সোনিয়া গান্ধী ভোটে লড়বেন না? কিংবা আমেঠী থেকে রাহুল গান্ধী দাঁড়ালে উত্তরপ্রদেশ থেকে আর টিকিট পাবেন না প্রিয়াঙ্কা? কংগ্রেস সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আগামী নির্বাচনে এমনটাই দেখা যাবে। পরিবারের একজনই কেবল ভোটে লড়তে পারবেন। এমনই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কংগ্রেস।
শুক্রবার থেকে রাজস্থানে অনুষ্ঠিত হবে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির। আর সেখানেই এই ‘এক পরিবার এক টিকিট’ নীতি অনুমোদন করতে পারেন দলীয় প্রধান সোনিয়া গান্ধী। গান্ধী পরিবারও এই তালিকায় থাকবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন।
সূত্র জানিয়েছে, বিজেপির হাতে আর সমালোচনার কোনো অস্ত্র তুলে দিতে নারাজ কংগ্রেস হাইকমান্ড। ফলে দলের অন্দরমহলে আসতে চলেছে একাধিক পরিবর্তন এবং নতুন সিদ্ধান্ত। ইতিমধ্যেই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি চালু হয়েছে কংগ্রেসে। যে কারণে মধ্যপ্রদেশের বিরোধী দলনেতার পদ ছেড়ে দিয়েছেন প্রবীণ নেতা কমলনাথ। এবার ‘এক পরিবার এক টিকিট’ কার্যকর হলে তা হবে এক মাইলফলক। সূত্র আরও জানায়, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠকের সময় ভোটকুশলীর তরফে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল গান্ধী পরিবারকে।
অন্যদিকে, নির্বাচনে দলকে জেতাতে হলে একমাত্র উপায় হলো সংগঠনকে মজবুত রাখা এবং দলের জন্য লড়াই করা। দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদেরই এক হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে হবে। একমাত্র তবেই দলীয় প্রার্থীরা ভোটের ময়দানে সফল হবেন। তিনদিনের চিন্তন শিবিরের আগেই এই বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
দলের নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে সোনিয়া বলেন, ‘আত্মসমালোচনা দরকার। তা অবশ্যই গঠনমূলক হতে হবে। কখনোই এমনভাবে আত্মসমালোচনা করা উচিত নয়, যাতে দলীয় সদস্যদের মনোবলই ভেঙে যায় এবং তারা লড়াইয়ের ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেন।’
এসএ/