শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও গণবিক্ষোভের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে।
সোমবার (৯ মে) তিনি পদত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম।
শ্রীলঙ্কান গণমাধ্যম ডেইলি মিরর এক প্রতিবেদনে জানায়, কিছু সময় আগেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে দ্বিতীয় দফায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর এলো।
জানা গেছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ও মাহিন্দা রাজাপক্ষের ভাই গোতাবায়া রাজাপক্ষের অনুরোধেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম কলম্বো পেজ জানায়, অব্যাহত বিক্ষোভের মধ্যে পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার (৬ মে) রাতে দ্বিতীয় দফার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য পদত্যাগের কথা উঠে।
পরে প্রেসিডেন্ট ভবনে গোতাবায়া রাজাপক্ষের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক হয়। প্রেসিডেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ছোট ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষকে সরে যেতে অনুরোধ করেন প্রেসিডেন্ট। তার অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।
মাহিন্দা রাজাপক্ষে বলেন, যদি তার পদত্যাগই শ্রীলঙ্কার অব্যাহত আর্থিক সংকটের একমাত্র সমাধান হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা করতে রাজি আছেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন।
অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা সংকটে জর্জরিত দেশটিতে অনেকদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তবে প্রেসিডেন্ট নিজেও পদত্যাগের চাপে রয়েছেন। কারণ শুরু থেকেই প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ।
এদিকে, শনিবার (৭ মে) শ্রীলঙ্কার বিরোধী দল সমাগি জন বালাভেগায়ার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
শনিবার সকালে বিরোধী দলের নেতাকে টেলিফোন করে এ অনুরোধ করেন তিনি। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে সাজিথ প্রেমাদাসা প্রেসিডেন্টকে জানান।
মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগ করায় মন্ত্রিসভাও ভেঙে যাবে। তার পদত্যাগের ঘোষণায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিসভার রদবদল হবে।
ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি ও আমদানি করা খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ-সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় এক মাসের বেশি সময় ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর আর কখনোই এমন সংকটের মুখে পড়েনি শ্রীলঙ্কা। এই সংকটের জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে আসছে দেশটির জনগণ।
আরএ/