মারিউপোল প্রতিরোধের দাবি জেলেনস্কির
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিউপোলে অব্যাহত রয়েছে প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এমনটাই দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর আগে শহরটি দখলে নেওয়ার দাবি করেছিল রাশিয়া।
রাশিয়া বলছে, তারা মারিউপোল শহর ‘মুক্ত করেছে’। কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় সেনা আজভস্তাল কারখানায় এখনও অবস্থান করছেন। সেখানে আরও কয়েক হাজার বেসামরিক ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, লড়াই চলছে। ‘কিছু বিজয় অর্জিত হয়েছে এমনটা বোঝাতে দখলদারেরা আমাদের দেশের দক্ষিণ ও পূর্বে সবকিছুই করে যাচ্ছে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘দখলদারদের মারিউপোলসহ আমাদের ভূখণ্ড ছাড়তে হবে। তারা (রাশিয়া) কেবল এ অনিবার্য পরিণতিটা বিলম্বিত করতে পারে। দখলদারেরা যা–ই বলুক না কেন, মারিউপোলে রুশ বাহিনীকে প্রতিরোধ করা হচ্ছে।’
দক্ষিণাঞ্চলীয় এ বন্দর নগরী রাশিয়ার অব্যাহত হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। মারিউপোল দখলের মাধ্যমে ডনবাস অঞ্চলের রুশ–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের সঙ্গে অধিকৃত ক্রিমিয়ার স্থল সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে মস্কো।
আজভস্তাল ইস্পাত কারখানা থেকে বেসামরিক নাগরিক ও আহত সেনাদের সরিয়ে আনতে দ্রুততম সময়ে মানবিক করিডরের জন্য আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সেখানে তাদের খাদ্য, পানি ও জরুরি ওষুধ ফুরিয়ে গেছে।
মারিউপোল ছেড়ে যাওয়া লোকজনকে নিয়ে তিনটি বাস গতকাল বৃহস্পতিবার জাপোরিঝঝিয়া শহরে পৌঁছায়। সেখানে একজন ছিলেন ৩৪ বছর বয়সী তাতিয়ানা দোরাশ। সঙ্গে ছিল তাঁর ছয় বছর বয়সী ছেলে ম্যাক্সিম। তাতিয়ানা বলেন, ‘আমি আর কোনো বোমার শব্দ শুনতে চাই না।’
এদিকে মারিউপোল ‘মুক্ত করায়’ রুশ বাহিনীর সফলতাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, প্রায় দুই মাস অবরুদ্ধ থেকে বেঁচে থাকার পরও সেখানে থাকা সেনাদের সঙ্গে চূড়ান্ত লড়াইয়ের দরকার নেই।
পুতিন বলেন, ‘ওই কারখানায় প্রস্তাবিত চূড়ান্ত হামলা চালানো অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হচ্ছে আমার। আমি এই পরিকল্পনা বাতিলের নির্দেশ দিচ্ছি। এলাকাটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে দিন, যাতে একটি মাছিও সেখান থেকে বের হতে না পারে।’
সের্গেই শোইগু বলেন, কারখানাটিতে আনুমানিক দুই হাজার ইউক্রেনীয় সেনা রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পুতিন তাদের অস্ত্র রেখে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনের সেনাদের যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি তিন দিক থেকে স্থলাভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। তবে ইউক্রেন বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে রাজধানী কিয়েভের আশপাশ ও উত্তর দিক থেকে সেনা সরিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে হামলা জোরদার করে রাশিয়া।
টিটি/