রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করবেন না জেলেনস্কি
সম্প্রতি রাশিয়ার বিশেষ অভিযানে বুচা, বরোদিয়াঙ্কা ও মারিউপোল শহরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র সামনে আসে। এর প্রেক্ষিতে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো সমঝোতা করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের শত বছরের পুরনো ইতিহাসে কিয়েভ হয় কিছু ভুখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে অথবা তা ত্যাগ করেছে। আমরা আমাদের অধিকারের বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত। আমরা অন্যের ভূখণ্ড নিতে চাই না, আর নিজেদের ভূখণ্ড দিতেও চাই না।’
এর আগে রুশ-ইউক্রেন চলমান সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইউক্রেন সফরের আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। বাইডেন কিয়েভ সফরে আসবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি। ইউক্রেন সফরে বাইডেনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেন জেলেনস্কি।
এদিকে, এখনো ইউক্রেনে অব্যাহত রয়েছে রুশ অভিযান। একের পর এক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে মস্কো। রবিবার (১৭ এপ্রিল) খারকিভে নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় মারিউপোল রুশ সেনাদের দখলে নেওয়ার খবরকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে কিয়েভ।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৫৩ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৫৪তম দিন। কিয়েভ থেকে সরে এসে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া। এখ পুরো ডনবাস অঞ্চল তারা দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে রুশ বাহিনীর অভিযান। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/