ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি
যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ অব্যহত রাখে, তাহলে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে রাশিয়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের সতর্ক করে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে রাশিয়া। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি মস্কো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাশিয়ার ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউক্রেনে দায়িত্বজ্ঞানহীন সামরিকীকরণ বন্ধ করার জন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানাই। বাইডেন প্রশাসনের এমন কার্যক্রম আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য অপ্রত্যাশিত পরিণতি বয়ে আনবে।’
এদিকে, সম্প্রতি বেলজিয়াম থেকে রাশিয়ার ১৯ জন কূটনীতিককে বহিষ্কারের জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ১৮ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে মস্কো। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বহিষ্কারদের যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়া ফেডারেশন ছেড়ে চলে যেতে হবে।
রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায় বলে নিন্দা করে ইইউ বলেছে, ‘রাশিয়া কর্তৃপক্ষের নেওয়া শুক্রবারের এ সিদ্ধান্তের কোনো ভিত্তি নেই। পুরোপুরিভাবে পাল্টা জবাব দিতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে মস্কো।’
গত মার্চ মাসের শেষের দিকে আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস এবং চেক রিপাবলিক সমন্বিতভাবে একটি নির্দেশ দিয়ে মোট ৪৩ জন রুশ দূতাবাস কর্মীকে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে বহিষ্কার করে। এরপর গত ৫ এপ্রিলে ইইউ ১৯ রুশকে তাদের কূটনৈতিক মর্যাদার বিপরীত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বেলজিয়াম ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
ইউরোপীয় দেশগুলোর এমন পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দিল রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা রাশিয়ায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তার কাছে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সংলাপ ও সহযোগিতার পরিকল্পনা বরাবরই ধ্বংসের জন্য ইইউকে দায়ী করেছে রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৫১ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৫২তম দিন। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/