পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথে যাদের অনুপস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ
কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তার পর সোমবার (১১ এপ্রিল) পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন শাহবাজ শরিফ। প্রেসিডেন্ট ভবনে ওই শপথ অনুষ্ঠান হলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন না প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
শপথ অনুষ্ঠানের কিছুক্ষণ আগেই প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি অসুস্থ বোধ করছেন এবং তার চিকিৎসকরা কয়েকদিন বিশ্রাম নিতে বলেছেন। ফলে সিনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সানজারানি তাকে শপথ পড়ান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির উর্দু সংস্করণে বলা হয়, ওই অনুষ্ঠানে আরেকজন ব্যক্তির অনুপস্থিতি অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।
সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে সামরিক মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিতও করেননি বা নাকচও করেননি। তবে ওই অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তাকে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠিয়েছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান।
পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সব পার্লামেন্ট সদস্য, পিপিপির বিলওয়াল ভুট্টো জারদারিসহ শীর্ষ নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তবে আসিফ আলি জারদারি অনুষ্ঠানে ছিলেন না।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম জং ডট কম জানিয়েছে, সোমবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) রাজনৈতিক কমিটি বৈঠক করেছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে তারা সভা-সমাবেশ করার মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মসূচী অব্যাহত রাখবে।
ইমরান খান বলেছেন, তিনি পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছেন, তাই সেখানে আর যাবেন না। বরং পিটিআই এখন তৃণমূল পর্যায় থেকে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করবে। এভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা হবে। সোমবার পিটিআইয়ের সমর্থকরা ইমরান খানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। পিটিআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের অন্তত ৪০টি স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারণ করার প্রতিবাদ জানাতে সমর্থকদের পথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন ইমরান খান। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানে তিনি কোনো পুতুল সরকার মেনে নেবেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানে সরকার বদলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, ‘পাকিস্তানে এক সরকারের বদলে আরেক সরকার আসবে-যাবে, সেটা আমাদের চাওয়া নয়। আমরা চাই দেশটিতে সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ যেন রক্ষা করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি সমৃদ্ধ এবং গণতান্ত্রিক পাকিস্তানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে ক্ষমতায় যেই থাকুন না কেন, তাতে কিছু যায় আসে না।’
চীন পাকিস্তানের পুরনো বন্ধু
নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘পাকিস্তানের বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য বন্ধু চীন। চীন সবসময়ই আমাদের বন্ধু ছিল, চিরদিন থাকবে। কেউ চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্ধুত্বে চিড় ধরাতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক পরিচালিত হবে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক অস্থির হয়ে উঠেছে; কিন্তু আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করার তো কোনো অর্থ নেই।’
সূত্র: বিবিসি
এসএ/