পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ
পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ।
সোমবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় পরিষদের (পার্লামেন্ট) অধিবেশনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী দৌড়ে শাহবাজের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ মাহমুদ কুরেশি। কিন্তু কুরেশিসহ পিটিআইয়ের সব সদস্য অধিবেশন বয়কট করায় কার্যত শাহবাজের জন্য মাঠ ফাঁকা হয়ে যায়।
পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা অধিবেশন বর্জন করায় শাহবাজের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো না। পরে ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ জন সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে ১৭৪ জনের রায় পেয়েছেন শাহবাজ শরিফ।
শাহবাজ শুধুমাত্র পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক নেতা নন। তার আরও একটি পরিচয় হল, তিনি সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই। দেশের বাইরে শাহবাজ তেমন পরিচিত না হলেও দেশের ভেতরে প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য তার সুনাম আছে।
শাহবাজের জন্ম লাহোরে। এক পাঞ্জাবি-কাশ্মীরি পরিবারে তার জন্ম। বাবার নাম মুহাম্মদ শরিফ, যিনি পাকিস্তানের নামকরা ব্যবসায়ী। শাহবাজও একজন ব্যবসায়ী। একাধিক ব্যবসা রয়েছে তার নামে। পারিবারিক স্টিল ব্যবসা রয়েছে। লাহোরের গর্ভমেন্ট কলেজ-ইউনিভার্সিটি থেকে আর্টসে স্নাতক করেছেন শাহবাজ। তিনি ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অফ কমার্স এবং ইন্ডাস্ট্রির প্রধান হিসেবে কাজ করেন।
ব্যবসা করতে করতেই রাজনীতিতে আসা তার। শাহবাজ ১৯৮৮ সালে পঞ্জাবের এক প্রত্যন্ত বিধানসভায় নেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর পার্লামেন্টেও কাজ করেছেন। আর তা ১৯৯০ সালে। এরপর ১৯৯৩ সালে আরও একবার পাঞ্জাব পার্লামেন্ট থেকে নির্বাচিত হন শাহবাজ। এরপর বিরোধী দলনেতা হিসেবে সংসদে কাজ করেন। ১৯৯৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নওয়াজের ভাই।
১৯৯৯ সালে জেনারেল পারভেজ মোশারফের নেতৃত্বে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ। ২০০০ সালে সৌদি আরবে নির্বাসনে থাকতে শুরু করেন তিনি। ২০০৭ সালে শাহবাজ আবার পাকিস্তানে ফেরেন। তখনই তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০০৮ সালে ফের নির্বাচনে জিতে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।
এর আগে শাহবাজের প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন তিনি। এ পদে সবথেকে বেশিদিন থাকার রেকর্ডও তার দখলে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে লন্ডনে চলে যাওয়ার পরই তার দল পিএলএম-এন পরিচালনার দায়িত্ব পান শাহবাজ।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর শনিবার (৯ এপ্রিল) মধ্যরাতে পাকিস্তানের মসনদ থেকে অপসারিত হন ইমরান। তার গদিচ্যুত করার পক্ষে ভোট দেন পার্লামেন্টের ১৭৪ সদস্য। ভোটাভুটির সময় পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন না ইমরান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেদিন মধ্যরাতেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান ইমরান।
আরএ/