ইউক্রেন পুনর্গঠনে ১ হাজার কোটি ইউরোর তহবিল
রাশিয়ার সামরিক অভিযানে বিধ্বস্ত ইউক্রেন। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন ও দেশটির পুনর্গঠনে তহবিল সংগ্রহ করেছে আন্তর্জাতিক একাধিক সংগঠন। এ তহবিলে ইতিমধ্যে জমা পড়েছে এক হাজার কোটি ইউরো। শনিবার (৯ এপ্রিল) পোল্যান্ডে এ তহবিল সংগ্রহের তথ্য জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে ‘স্ট্যান্ড আপ ফর ইউক্রেন’ ক্যাম্পেইনের একটি কনফারেন্সে যোগ দিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জানান, সারা বিশ্ব থেকে ইউক্রেনের জন্য সংগৃহীত তহবিলে এরই মধ্যে ৯০০ কোটি ইউরো জমা পড়েছে। এর পাশাপাশি ইউরোপীয় কমিশন দেবে আরও ১০০ কোটি ইউরো। মোট এক হাজার কোটি ইউরো শিগগিরই ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
কনফারেন্সে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট আরও জানান, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের কারণে এখন পর্যন্ত ৪০ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এ ছাড়া ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহীন অবস্থায় নিজ দেশেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এই তহবিল সংগ্রহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংগঠনের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছেন সংগীতশিল্পী এলটন জন, আলানিস মরিসেটে, বিলি আইলিশ, অ্যানি লিনক্স ও ক্রিস রকের মতো আন্তর্জাতিক তারকারা। কনফারেন্সে এমন মানবিক উদ্যোগের জন্য ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন সংশ্লিষ্ট সব দেশ ও দাতা সংস্থাগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৪৬ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৪৭তম দিন। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/