ইমরানকে ভারতে চলে যেতে বললেন মরিয়ম নওয়াজ
অনাস্থা প্রস্তাবের আগে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের প্রশংসা করেছেন। এর জের ধরে ইমরানকে ভারতে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
ইমরান খান বলেন, তিনি অন্য রাজনীতিকদের চেয়ে ভারত সম্পর্কে ভালো জানেন। দেশটির আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শ এবং কাশ্মীরে যা ঘটছে, তার জন্য দেশটির সঙ্গে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্ক নেই বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
তবে ভারতের ‘স্বাধীন’ পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশটিকে তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তনের জন্য বলার মতো সাহস কোনো পরাশক্তির নেই।
ইমরান খান বলেন, ‘ভারতীয়রা নিজদেরকে সম্মান দিতে জানে। কেউ তাদের নির্দেশ দিতে পারে না। ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে হস্তক্ষেপ করার সাহস কোনো পরাশক্তির নেই। রাশিয়ার বিষয়ে নীতি কী হবে ভারতকে এই কথা জিজ্ঞেস করার সাহস কয়জন ইউরোপীয় কূটনীতিকের আছে?’
ইমরান খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে নওয়াজ শরিফ কন্যা মরিয়ম বলেন, ‘তাদের প্রতি যখন এত টান আপনি পাকিস্তানে বসবাস না করেই ভারতে বাস করলেই পারেন।’
মরিয়াম নওয়াজ টুইটারে লেখেন, ‘ইমরানকে ঘরে পাঠিয়েছে তার দল, অন্য কেউ নন। যদি আপনি ভারতকে এত বেশি ভালোবাসেন, তাহলে কেন সেখানে চলে যাচ্ছেন না? পাকিস্তানকে একা থাকতে দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ২৭ বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মতো তাদের কেউই দেশের সংবিধানকে ব্যবহার করেননি। বাজপেয়ী মাত্র এক ভোটে হেরেও ক্ষমতা থেকে সরে গেছেন, আপনার মতো সংবিধান ও গোটা জাতিকে জিম্মি করেননি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ আদালত প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে বেআইনি এবং ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী পদে এবং মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহালের রায় দেন। আদেশে পাকিস্তানের মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহাল এবং শনিবার (৯ এপ্রিল) পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। পাঁচ দিনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে বৃহস্পতিবার রাতে এ রায় দেন।
৩৪২ আসনের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে অন্তত ১৭৩ জন সদস্যের সমর্থন পেতে হবে; কিন্তু তার বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব তোলার আগেই ১৭৭ জন সদস্যের সমর্থন জড়ো করে রেখেছে।
এসএ/