অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পথে পাকিস্তান
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিগগিরই অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের এক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়াতে সোমবার (৪ এপ্রিল) অবিলম্বে ‘অর্থনৈতিক সনদ (সিওই)’ (চার্টার অব ইকোনমি) বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির বাণিজ্য ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।
করাচির চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিজনেসম্যান গ্রুপের চেয়ারপারসন এম জুবাইর মতিওয়ালা বলেন, ‘সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসা ও শিল্প খাত রয়েছে উদ্বেগে। রুপির মূল্যহ্রাস, রিজার্ভ কমে যাওয়া, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ রাজস্ব ঘাটতির কারণে দেশটির অর্থনীতি ইতিমধ্যে ভঙ্গুর। এ অবস্থায় অর্থনীতি বাঁচাতে হলে দ্রুত রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে।’
বর্তমানে দেশটিতে রুপির ওপর অতিরিক্ত চাপ, শেয়ারবাজারের পতন ও বিদেশি ক্রেতাদের নেতিবাচক মনোভাবের ফলে অর্থনৈতিক ভারসম্য বজায় রাখতে বড় রকমের হেরফের হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ইফরান ইকবাল শেখ বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বিদেশি ও স্থানীয় কোনো বিনিয়োগ করা যাবে না। এ মুহূর্তে শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে এবং ডলারের বিনিময়ের হার ১৮৫ রুপি ছাড়িয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সুপ্রিম কোর্টকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তান রেডিমেড গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সংগঠক ইজাজ খোকার বলেন, ‘এ পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং ইতিমধ্যে এর চাপ অনুভূত হচ্ছে। সরকারকে মাথায় রাখতে হবে, আগামী বছরের মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে জিএসপি প্লাস চুক্তি শেষ হতে যাচ্ছে।’
এদিকে, রাজনৈতিক এই অস্থিতিশীলতা কবে নাগাদ সমাধান হবে, তা এখনই হলফ করে বলা যাচ্ছে না। কেননা ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া সাংবিধানিক কি না, সে বিষয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায় পিছিয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) প্রথম দিনের শুনানি শুরু হলেও বুধবার (৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১১টা পর্যন্ত তা মুলতবি ঘোষণা করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এ সময় দেশের রাষ্ট্রীয় ও পররাষ্ট্রনীতিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না বলে কোর্টের পক্ষ থেকে সাফ জানানো হয়।
এসএ/