অস্তিত্ব সংকট হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া: পেসকভ
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, অস্তিত্বের হুমকিতে পড়লেই পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করবে রাশিয়া। তার দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য ও পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (২২ মার্চ) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
ইউক্রেনের চলমান রুশ হামলার ২৭তম দিনে গতকাল সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিস্টিয়ান আমানপোরকে সাক্ষাৎকার দেন দিমিত্রি পেসকভ। সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে আমানপোর জানতে চান, ইউক্রেনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবেন না বলে পেসকভ নিশ্চিত কি না? জবাবে পুতিনের এ মুখপাত্র বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা প্রশ্নে আমাদের একটি নীতিমালা আছে, আর তা প্রকাশ্য। ঠিক কী কী কারণে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে, তা আপনারা পড়ে নিতে পারেন। সুতরাং, এটি যদি আমাদের দেশের জন্য হুমকি তৈরি করে, তবে আমাদের নীতির সঙ্গে সংগতি রেখে এর (পারমাণবিক অস্ত্র) ব্যবহার হতে পারে।’
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন দুই দিনের মধ্যে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্যমতে, প্রতিরোধসহ নানা কৌশলের মাধ্যমে রুশ সেনাদের অগ্রগতি ধীর করে দিতে সক্ষম হয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া তাদের পূর্ববর্তী পরিকল্পনা থেকে সরে এসে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করেছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
তবে সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেসকভ বলেন, ‘এটি (বিশেষ অভিযান) একেবারে পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা ও লক্ষ্য অনুযায়ীই চলছে।’ তিনি আরও বলেন, শুরু থেকেই এ যুদ্ধ কয়েক দিনের মধ্যে শেষ করে দেওয়ার কথা কেউ ভাবেনি।
পেসকভ মনে করেন, ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার অভিযান ‘গুরুতর লক্ষ্য অর্জনে পরিচালিত গুরুতর একটি অভিযান।’ অভিযানের লক্ষ্য এখনও অর্জিত হয়নি বলে সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন তিনি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর প্রতিক্রিয়ায় মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
পেসকভ আক্ষেপ করে বলেন, দশকের পর দশক ধরে রাশিয়ার নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের ইস্যুকে এড়িয়ে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন চান বিশ্ব আমাদের উদ্বেগের কথা শুনুক ও বুঝুক। আমরা কয়েক দশক ধরে বিশ্বের কাছে, ইউরোপের কাছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমাদের উদ্বেগগুলো জানানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেনি। আর তাই, খুব বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগে সামরিক অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যেন আমাদের সীমান্তকে রুশবিরোধীদের থেকে মুক্ত রাখা যায়।’
টিটি/