রাশিয়ার মুহুর্মুহু বিমান হামলায় কাঁপছে ইউক্রেন
সামরিক অভিযান শুরুর পর গত দুই দিনে ইউক্রেনে বিমান হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে রাশিয়া। এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনে ৩০০ বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোকে মোকাবিলায় কিয়েভও যুদ্ধবিমানের ব্যবহার বাড়িয়েছে। ইউক্রেনের ১৩২টি যুদ্ধবিমান ও মাত্র ৫৫টি সামরিক হেলিকপ্টারের বিপরীতে ১ হাজার ৩৯১টি যুদ্ধবিমান ও ৯৪৮টি হেলিকপ্টার নিয়েও ইউক্রেনের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি রাশিয়া। যদিও বিমান হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে তারা।
ওই মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানান, বেশিরভাগ সামরিক বিমান আকাশ থেকে স্থলে হামলা চালাচ্ছে, প্রধানত স্থির লক্ষ্যবস্তুতে। এ ছাড়া রুশ বিমানগুলো ইউক্রেনের আকাশসীমায় খুব বেশি সময় অবস্থান করছে না। আর রাশিয়ার যুদ্ধবিমান লক্ষ্য করে নিজেদের স্বল্প ও দূরপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার এবং ড্রোন হামলা অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এদিকে উত্তর কৃষ্ণ সাগরেও নৌ তৎপরতা বাড়িয়েছে রুশ সেনারা।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গোয়েন্দা হালনাগাদ তথ্যের বরাতে রবিবার (২০ মার্চ) বিবিসি জানায়, রাশিয়া ইউক্রেনের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা মূলত এখন স্ট্যান্ড-অফ বা ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্য দূরপাল্লার অস্ত্রের ওপর নির্ভর করছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
২৬ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২৭তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/