ইউক্রেনে এ পর্যন্ত ছয় সাংবাদিক নিহত
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ছয় সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও আটজন। এছাড়া দুইজনকে অপহরণ করেছে রুশ বাহিনী। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংগঠন প্রেস এমব্লাম ক্যাম্পেইন (পিইসি) শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে অন্তত তিন হাজার বিদেশি সাংবাদিক কাজ করছেন বলেও জানিয়েছে প্রেস এমব্লাম। এছাড়া রাশিয়ার হ্যাকাররা ইউক্রেনের মিডিয়ার ওয়েবসাইটে আক্রমণ করেছে। খবর আলজাজিরার।
পিইসি বলছে, কিয়েভের নিকটবর্তী ইরপিন শহরে যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহের সময় তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের কেউ রকেট হামলার ছড়িয়ে পড়া অংশের আঘাতে আহত হয়েছেন, আবার কেউ গুলিতে আহত হয়েছেন।
কয়েক দিন আগে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজের ক্যামেরাম্যান পিয়েরে জাকর্জেভস্কি নিহত হন বলে জানায় বিবিসি। একই ঘটনায় তার সহকর্মী বেঞ্জামিন হল আহত হন।
এর আগে ইরপিনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক ব্রেন্ট রেনড (৫২) নিহত হন। ইরপিন শহরের কাছে একটি গাড়ি লক্ষ্য করে রুশ বাহিনী গুলিবর্ষণ করলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ব্রেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের পিবডি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক ছিলেন।
দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস বলছে, হামলায় ব্রেন্টের সঙ্গে হুয়ান আরেডন্ডো নামে একজন মার্কিন ফটো সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
২৪ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২৫তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
কেএফ/