নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না: চীন
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এর প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতে। এবার এ বিষয়ে মন্তব্য করে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে চীন। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না বলে মন্তব্য করেছেন চীনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী লি ইউচেং।
শনিবার (১৯ মার্চ) বেইজিংয়ে একটি নিরাপত্তা ফোরামে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না। ইতিহাস দেখলে সেই প্রমাণ মিলবে। নিষেধাজ্ঞা শুধু সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে। অর্থনীতি ও আর্থিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বিশ্ব অর্থনীতিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই রাশিয়ার নাগরিকদের পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো একের পর এক যেভাবে মস্কোর উপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, তা চরম আপত্তিকর হয়ে উঠছে।’
ন্যাটো সম্প্রসারণ নিয়ে লি ইউচেং বলেন, ‘রাশিয়ার মতো একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশকে কোণঠাসা করে পূর্ব ইউরোপে জোটের আরও সম্প্রসারণের চেষ্টা থেকে ন্যাটোর সরে আসা উচিত।’
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
২৪ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২৫তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/