রুশ হামলায় ৬৩৬ বেসামরিক ইউক্রেনীয় নিহত: জাতিসংঘ
রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের অন্তত ৬৩৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার (১৪ মার্চ) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওএইচসিএইচআর কার্যালয় জানায়, রাশিয়ার হামলায় রবিবার (১৩ মার্চ) পর্যন্ত ইউক্রেনে অন্তত ৬৩৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৬ জন শিশু রয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি। কারণ হামলার মধ্যে খারকিভ এবং মারিউপোলের মতো শহর থেকে তথ্য পেতে তাদের দেরি হচ্ছে।
এদিকে, চতুর্থ দফা শান্তি আলোচনার প্রথম দিন সোমবার (১৪ মার্চ) কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি মস্কো-কিয়েভ। শান্তি আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। মুহুর্মুহু বোমা হামলায় কেঁপে উঠছে একেকটি ভবন। মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে একেকটি আবাসিক এলাকা।
কিয়েভের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আন্তোনোভ বিমান বন্দরের কাছেও বোমা হামলা চালানো হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মারিউপোলে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। শহরটির যেদিকে চোখ যায় কেবল ধ্বংস্তূপ ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। তীব্র ঠান্ডা ও পানি সংকটসহ দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা।
এদিন পশ্চিম ইউক্রেনের রিভনে শহরের বাইরে একটি টেলিভিশন টাওয়ারে রুশ বাহিনীর বিমান হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
উনিশ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২০তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/