জেলেনস্কি-পুতিন বৈঠকের আভাস রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সংকট সমাধানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রয়োজন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তিনি বলেন, মস্কো কখনো যুদ্ধে জড়াতে চায়নি এবং ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান সংঘাতও শেষ করতে চায় তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) তুরস্কের আন্তালিয়া শহরে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন লাভরভ। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাস এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর লাভরভ বলেছিলেন, ‘চলমান সংকট সমাধানের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট এ ধরনের আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে এর জন্য কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন হবে।’
লাভরভ বলেন, ‘আমরা আজ নিশ্চিত করেছি যে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেননি প্রেসিডেন্ট পুতিন। আমি ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবারকে মনে করিয়ে দিয়েছি যে সংকট সমাধানের জন্য সব সময় প্রস্তুত রাশিয়া। কিন্তু শুধু বৈঠকের জন্য বৈঠক করে কোনো লাভ নেই।’
পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সম্ভবত কোনো এক পর্যায়ে গিয়ে এ ধরনের আলোচনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। তবে এটি হওয়ার জন্য প্রস্তুতিমূলক নানা কাজ করা উচিত।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে মস্কো এবং কিয়েভের প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যেই তিন দফা আলোচনা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো সমঝোতায় আসতে পারেননি তারা।
লাভরভ বলেছেন, ‘ইউক্রেন আমাদের অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবগুলো শুনেছে এবং তারা এর নির্দিষ্ট উত্তর দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা সেই উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছি।’
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
পনেরো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ১৬তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/