যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের ৩ দাবি
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তিন দাবি উত্থাপন করেছেন। ইউক্রেন তাদের দাবি মানলে সাথে সাথেই সামরিক অভিযান বন্ধ করা হবে বলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৭ মার্চ) পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এসব দাবির কথ জানান।
পেসকভ বলেন, ‘ক্রিমিয়া যে রাশিয়ার অংশ, সেটা অবশ্যই মানতে হবে ইউক্রেনকে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চল দুটিকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নিতে হবে।’
পেসকভ রাশিয়ার অন্যতম প্রধান দাবির পুনরুল্লেখও করে বলেন, ‘ইউক্রেন ন্যাটো বা অন্য কেনো জোটের অংশ হতে পারবে না এবং সে ব্যাপারে দেশের সংবিধান সংশোধন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব দাবি মেনে নিলে এখনই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করে দেবে রাশিয়া। তবে রাশিয়া অবশ্যই ইউক্রেনের ‘নিরস্ত্রীকরণ’ নিশ্চিত করবে।
আগামী বৃহস্পতিবার দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে তুরস্কের আনাতলিয়ায় মুখোমুখি একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
বারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১৩তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/