ইন্টারপোল থেকেও বাদ পড়তে যাচ্ছে রাশিয়া
একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সার্ভিস সরিয়ে নেওয়ার পর এবার ইন্টারপোল থেকেও বাদ পড়তে যাচ্ছে রাশিয়া। ইতিমধ্যে ইন্টারপোলের প্রতি রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এসব কথা জানিয়েছেন বলে খবর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
রবিবার (৬ মার্চ) এক টুইটবার্তায় প্রীতি প্যাটেল বলেন, ‘যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ইন্টারপোল থেকে অবিলম্বে রাশিয়াকে প্রত্যাহার করতে অনুরোধ জানিয়েছে। এ সপ্তাহেই রাশিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ইন্টারপোলের নির্বাহী কমিটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনবিষয়ক সহযোগিতার ক্ষেত্রে রাশিয়ার আচরণ সরাসরি হুমকি।’ তবে পশ্চিমা দেশগুলোর এ ধরনের অনুরোধের পেছনে কী কারণ রয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি প্যাটেল। প্রীতি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলো কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে চায়।’
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ চালানোর বিষয়ে যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে। বিশেষ করে, বেসামরিক মানুষের ওপর রাশিয়ার হামলা চালানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।’
ইউক্রেন হামলায় মস্কোর সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তদন্তের জন্য গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যরা ভোট দেন। ইন্টারপোলের সদস্য দেশের সংখ্যা ১৯৪।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
এগারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১২তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/