মারিওপোলে তীব্র হলো রাশিয়ার হামলা
ইউক্রেনের মারিওপোল শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে এক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাশিয়া রাজি হয়েছিল। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তারা আবার শহরটির উপর অব্যাহত গোলা হামলা চালাচ্ছে। ফলে এই পরিকল্পনা এখন ভেস্তে গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মারিওপোল শহরের ডেপুটি মেয়র সের্গেই অরলভ অভিযোগ করছেন, রাশিয়া এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, তারা সেখানে ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এর ফলে শহর থেকে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা তাদের এখন স্থগিত রাখতে হচ্ছে।
সের্গেই অরলভ বলেন, ‘রুশ গোলাবর্ষণের কারণে এখন সেখানে রাস্তায় বের হওয়া মোটেই নিরাপদ নয়। যে পথ ধরে পাঁচ থেকে ছয় হাজার বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল, সেই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় লড়াই চলছে।
তবে এ ব্যাপারে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছে। তারা বলছে, ইউক্রেনের উগ্র জাতীয়তাবাদীরাই শহর থেকে বেসামরিক মানুষকে বের হতে বাধা দিচ্ছে। তারা আরও বলছে, রুশ বাহিনী যখন একটি মানবিক ত্রাণ করিডোর তৈরি করে, তখন রুশ বাহিনীর উপর গুলি চালানো হয়।
মারিওপোল শহরে গত কদিন ধরেই তীব্র লড়াই চলছে। সেখানে লোকজনের বাসাবাড়িতে পানি এবং বিদ্যুতের সরবরাহ নেই, খাদ্য এবং ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। মারিওপোল থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, এমন একজন বিবিসিকে জানিয়েছেন, শহরটির অবস্থা এখন নরকের মতো।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
দশ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১১তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/