আজ দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসছে ইউক্রেন-রাশিয়া
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পঞ্চম দিন গত সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দফায় বৈঠকে বসলেও কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি যুদ্ধরত দেশ দুটি। ওইদিন সমাধানের পথ চিহ্নিত করে আলোচনার জন্য ফিরে যায় দুই দেশের প্রতিনিধি দল। সেই শান্তি আলোচনার ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার (২ মার্চ) ফের বৈঠকে বসতে যাচ্ছে দেশ দুটি।
প্রথম দফার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি আর রুশ সেনা প্রত্যাহার চেয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়া চাইছে সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগ না দেওয়ার নিশ্চয়তা। ওই আলোচনার সময়েও ইউক্রেনে রুশ হামলা চলছিল। দুটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া।
গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযানের পঞ্চম দিনে বেলারুশের উদ্যোগে প্রথম দফা শান্তি আলোচনায় বসে দেশ দুটির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী সেই আলোচনার ফল আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
তবে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম গ্ল্যাভকম দেশটির প্রতিনিধি দলের এক সূত্রের বরাতে খবর দিয়েছে, প্রথম দফা আলোচনায় ইউক্রেন যেন ইউরোপীয় ব্লকে যাওয়া থেকে বিরত থাকে সেই প্রতিশ্রুতি চেয়েছে রাশিয়া। এই বিষয়ের উপর ইউক্রেনে গণভোট আয়োজনের দাবিও তুলেছে রাশিয়া।
এ ছাড়া দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বীকৃতির পাশাপাশি ক্রিমিয়ার দাবি ইউক্রেনকে চিরতরে ছাড়তে বলেছে রাশিয়া। অন্যদিকে ইউক্রেনের দাবি, দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও রাশিয়ান সৈন্য প্রত্যাহার।
প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে ২ লাখ সেনা জড়ো করে রাশিয়া। রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বারবার সতর্কতা দিয়েছিল; কিন্তু বরাবরই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
এরপর গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
ছয় দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের সপ্তম দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/