কর্নাটকে হিজাব পরে কলেজে আসায় ৫৮ ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কার
ভারতের কর্নাটক রাজ্যে মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাসে হিজাব পরে আসা বন্ধের ইস্যু নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি দিনকে দিন আরো ঘোলাটে হয়ে উঠছে। খবর বিবিসি বাংলার।
একদিকে যেমন রাজ্যের পুলিশ ও সরকারি কর্তৃপক্ষ এই ইস্যুতে তাদের অবস্থান আরো কঠোর করছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, সেইসাথে হিজাব পরে ক্লাসে আসার অধিকারের দাবিতে মুসলিম ছাত্রীদের বিক্ষোভও ছড়িয়ে পড়ছে।
রাজ্যের শিভামোগ্গা জেলার শিরালাকোপ্পার একটি সরকারি কলেজে হিজাব পরে আসায় ৫৮ জন ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিসষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তারা সরকারি নির্দেশ অমান্য করে হিজাব পরে কলেজে এসেছিল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল।
এই বহিস্কারাদেশ নির্দেশ শুক্রবার দেওয়া হয়, কিন্তু শনিবারও ওই ছাত্রীরা আবারও হিজাব পরেই কলেজে ঢোকার চেষ্টা করে। সেখানে তারা স্লোগান দেয় যে হিজাব পরা তাদের অধিকার। যদিও তাদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
মামলার ঘটনা ঘটেছে তুমাকুরু জেলার একটি সরকারি প্রি ইউনিভার্সিটি কলেজে। ওই ছাত্রীরা হিজাব পরে কলেজে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, যখন পুলিশ তাদের পথ আটকায়। ওই ছাত্রীরা তাদের প্রিন্সিপাল এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে জবাব চাইছিলেন কেন হিজাব পরে তাদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
এই ঘটনার পরেই কলেজের প্রিন্সিপাল পুলিশের কাছে ওই ছাত্রীদের নামে অভিযোগ দায়ের করেন, যার ভিত্তিতে বেআইনি জমায়েত ও একজন সরকারি অফিসারের জারি করা নির্দেশ অমান্য করার ধারায় ১০ জন ছাত্রীর বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছে পুলিশ। কলেজটির ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
হিজাব পরার অধিকার চেয়ে কয়েকজন ছাত্রী কর্নাটক হাইকোর্টে যে মামলা করেছিল, তার অন্তর্বর্তী আদেশে আদালত বলেছিল মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনও ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া যাবে না।
তবে গত কয়েকদিন রাজ্যটির নানা জায়গায় অনেক ছাত্রীই হিজাব পরেই স্কুল কলেজে গেছেন এবং ক্লাসে ঢুকতে না পেরে বিক্ষোভ করেছেন। হিজাব পরা নিয়ে বিক্ষোভ রাজ্যের কোডাগু, চিত্রদুর্গ, দাভানগেরি, ব্যাঙ্গালোরসহ নানা জায়গাতেই হচ্ছে।
ব্যাঙ্গালোরের কাছে তুমাকুরুর একটি কলেজে একজন শিক্ষিকাকে হিজাব পরার কারণে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। ওই শিক্ষিকা ইংরেজি পড়াতেন কলেজে। কর্তৃপক্ষ তাকে হিজাব ছাড়া ক্লাস নিতে বললে তিনি ইস্তফা দেন।
কেএফ/