পুতিনের সঙ্গে শিগগির বৈঠক করবেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ‘খুব শিগগির’ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। সোমবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে দুই দেশের কর্মকর্তারা সৌদি আরবে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন কয়েক দিনের মধ্যেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
রোববার সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য বৈঠক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, ‘বৈঠকের নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে এটি খুব শিগগিরই হতে পারে।’ বৈঠকটি চলতি মাসের মধ্যেই হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই হবে। দেখা যাক কী হয়।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। এয়ার ফোর্স ওয়ানের ফ্লাইট শেষে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার একটি শক্তিশালী সামরিক অবকাঠামো রয়েছে, এটা আমাদের বুঝতে হবে। তারা অতীতে হিটলার ও নেপোলিয়নকে পরাজিত করেছে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা যুদ্ধ করে আসছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘তারা (রুশ বাহিনী) আগেও যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করেছে। তবে আমার বিশ্বাস, পুতিন এখন সত্যিই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান।’
পুতিন ইউক্রেনের পুরো ভূখণ্ড দখল করতে চান কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি নিজেও পুতিনকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। ট্রাম্পের মতে, যদি পুতিন এমন পরিকল্পনা করেন, তাহলে সেটি ‘আমাদের জন্যও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।’
ট্রাম্পের রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি ইউক্রেন ও ইউরোপের জন্য নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ আশঙ্কা করছে, ট্রাম্প ইউক্রেনকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে সম্মত হতে পারেন। এর ফলে ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড রাশিয়ার হাতে চলে যেতে পারে এবং পুতিনের দাবি বাস্তবায়িত হতে পারে।
রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণ এবং ন্যাটো জোটে যোগ না দেওয়ার নিশ্চয়তা অর্জন করা। পুতিনের দাবি, ইউক্রেনকে অবশ্যই ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে এবং বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের ২০ শতাংশ ভূখণ্ডের ওপর তাদের অধিকার স্বীকার করতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, উভয় দাবিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘আশীর্বাদ’ রয়েছে। এদিকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। ইউরোপের শীর্ষ নেতারা ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্রয়োজনে ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনেরও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।
সৌদি আরবে রুশ-মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠক, প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের আলোচনা এবং ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের মাধ্যমে হয়তো সেই বহুল প্রতীক্ষিত প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে—ইউক্রেন যুদ্ধ কবে শেষ হবে?
