ঘণ্টায় ২০৯ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে হারিকেন বেরিল
ছবি: সংগৃহীত
আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। ক্যাটাগরি ৪-এ পৌঁছানো এই ঘূর্ণিঝড়টিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
শক্তিশালী এই ঝড় ক্যারিবীয় অঞ্চলে ঘণ্টায় ১৭৯ থেকে ২০৯ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার আটলান্টিক মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয় হারিকেন বেরিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (NHC) জানিয়েছে, রোববার ভোর রাত থেকে হারিকেন বেরিল ক্যারিবীয় অঞ্চলের উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানতে পারে। NHC বলছে, ২০২৪ সালের চলতি মৌসুমের প্রথম হারিকেনটি রোববার সকালে বার্বাডোসের প্রায় ৬৭৫ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আটলান্টিকে জুন মাসের প্রথম দিকে বড় ধরনের হারিকেন সৃষ্টির ঘটনা অনেকটা বিরল। সোমবারের মধ্যে বেরিল ক্যাটাগরি-৪ হারিকেনে রূপ নিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলেছেন, হারিকেন বেরিলের আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭৯ থেকে ২০৯ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
শক্তিশালী হারিকেনটির আঘাতে এ অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের আশঙ্কায় বার্বাডোস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রানাডাইন দ্বীপপুঞ্জ, গ্রানাডা এবং টোবাগোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার বলেছে, বেরিলের প্রভাবে এসব দ্বীপে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া বেরিলের আঘাতের সময় ক্যারিবীয় দ্বীপগুলোতে জোয়ারের স্তর স্বাভাবিকের তুলনায় ৬ থেকে ৯ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে।
হারিকেন বেরিল সবার আগে আঘাত হানতে পারে পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগর লাগোয়া উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে। এরপর ডমিনিকা, মার্টিনিক, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রানাডাইনস ও গ্রানাডার দিকে ধেয়ে যেতে পারে ঝড়টি। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় বড় বড় ঢেউয়ের পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আলবার্তোর পর আটলান্টিক মহাসাগরে বেরিলই চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় ঝড়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আটলান্টিক মহাসাগর লাগোয়া অঞ্চলে ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হারিকেনের মৌসুম। চলতি বছর ওই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হারিকেন আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। এর আগে আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালে অন্তত ২৫টি ঝড় আঘাত হানতে পারে।
এসব ঝড়ের মধ্যে ৮ থেকে ১৩টি হারিকেনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড উষ্ণ হয়ে ওঠার কারণে ওই অঞ্চলে ঘনঘন হারিকেনের সৃষ্টি হচ্ছে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।