বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে হত্যা, বাবা-মায়ের যাবজ্জীবন
নিহত তরুণী সামান আব্বাস ও তার বাবা-মা। ছবি: সংগৃহীত
নিজের কন্যাকে হত্যা করার অপরাধে এক পাকিস্তানি দম্পতিকে ইতালির একটি আদালত যাবজ্জীবন করাদণ্ড দিয়েছেন। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) আদালত ওই বাবা-মাকে সাজা দেয়।
প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি জানায়, ইতালির বোলগনার কাছে নভেলারা শহরে বাস করতন ১৮ বছরের সামান আব্বাস। ২০২১ সালের মে মাসের পর থেকে এই তরুণীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর আগের বছর সামানার বাবা-মা তাকে পাকিস্তানের এক আত্মীয়কে বিয়ের করার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে, সেই প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি।
সেন্ট্রাল ইতালির রেজিও এমিলিয়ার একটি ট্রাইব্যুনাল ওই পাকিস্তানি দম্পতিকে যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছে। রায়ে আদালত বলেন, ওই পাকিস্তানি দম্পতির নির্দেশে ওই তরুণীর একজন চাচা সামানাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, রায়ে ওই চাচাকে ১৪ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে। তবে, সামানার দুই ভাইকে খালাস করে দিয়েছেন আদালত।
গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সামানার ওপর চাপ দিচ্ছিল তার বাবা-মা। এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেছিল সে। আর ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে সমাজকর্মীদের আশ্রয়ে ছিলেন তিনি। ২০২১ সালের এপ্রিলে পরিবারের কাছে ফিরে যান সামান। তার পরিকল্পনা ছিল, বাবা-মায়ের কাছে থাকা পাসপোর্ট কৌশলে নিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করা। কিন্তু, এতে সায় ছিল না ওই পাকিস্তানি দম্পতির।
সামানার নিখোঁজের পরই তার প্রেমিক প্রথমে পুলিশকে বিষয়টি জানায়। মে মাসে পুলিশ সামানার বাড়িতে গেলেও সেখানে কাউকে খুঁজে পায় না। এর আগেই ওই পাকিস্তানি দম্পতি ইতালি ছেড়ে নিজ দেশে পাড়ি জমায়।
ধারণা করা হচ্ছে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল রাত থেকে ১ মের যেকোনো সময়ে সামানাকে খুন করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, ওই সময়ে ওই বাড়িতে থাকা পাঁচজন মাটি খননের কিছু জিনিস নিয়ে বের হয় ও আড়াই ঘণ্টা পরে ফিরে আসে। এর বছর খানেক পর সামানার মরদেহ একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে পাওয়া যায়।
নিহতের ভাই পুলিশকে জানিয়েছে, সে তার বাবাকে হত্যার কথা বলতে শুনেছে এবং চাচাই তার বোনকে হত্যা করেছে। পাকিস্তানে থাকার সময় সামানার বাবা শাহবার আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয় ও পরে ইতালিতে নিয়ে যাওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত দানিশ হাসনাইন নামে সামানার চাচাকে ফ্রান্স থেকে ও দুই ভাইকে স্পেন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারের সময় ওই চারজন উপস্থিত থাকলেও সামানার মা নাজিয়া শাহীন এখনও পলাতক রয়েছে।