মহামারির ব্যাপক ঝুঁকিতে গাজা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মহামারির ব্যাপক ঝুঁকিতে গাজা। ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার বাহিনী ইসরায়েলের চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের জেরে গাজা পড়েছে ব্যাপক মানবিক সংকটের মুখে। এমন অবস্থায় গাজা নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডব্লিউএইচও বলছে, অবনতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে মহামারির ব্যাপক ঝুঁকির মুখে রয়েছে গাজা।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। একইসঙ্গে ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে গাজায় মহামারির ব্যাপক ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
এক সাক্ষাৎকারে ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেন, গাজায় মহামারির বিশাল ঝুঁকি রয়েছে এবং আমরা ইতোমধ্যেই এর প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি। তাই গাজায় চলমান লড়াই বন্ধ হতে হবে। সেখানে যুদ্ধবিরতি দরকার।
তিনি বলেন, গাজার পরিস্থিতি অবশ্যই খারাপ হচ্ছে। সেখানে এমন কিছুর সংমিশ্রণ রয়েছে যা মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে। আবহাওয়া ঠান্ডা ও আর্দ্র এবং ৯০ শতাংশ মানুষ এই ধরনের আবহাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি সেখানকার মানুষ এটাও জানেন না কোথা থেকে তারা পর্যাপ্ত খাবার পাবেন।
তিনি আরও বলেন, গাজার মানুষ ঘুমাতে পারছেন না। এটি মানুষের ইমিউন সিস্টেমের (রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার) ক্ষতি করে। মানুষ আতঙ্কিত। তারা জানেন না কী হতে চলেছে। গাজায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই এবং মানুষ আহত হলে হাসপাতালেও যেতে পারেন না।
মার্গারেট হ্যারিস বলেন, প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি অ্যাম্বুলেন্সও পাঠাতে সক্ষম হয়নি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে আহত মানুষ চিকিৎসাও পাচ্ছেন না।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে টানা প্রায় আড়াই মাস ধরে গাজায় ইসরায়েল আগ্রাসন চালাচ্ছে। এই আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ১৯ হাজার ৬৬৭ জন ফিলিস্তিনি। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী এবং শিশু। এ ছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজারের বেশি মানুষ।
ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের জেরে ভূখণ্ডটি ব্যাপক মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের মধ্যেই প্রায় ২০ লাখ মানুষ অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ভেতরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।