জাতিসংঘ মহাসচিবের পদত্যাগ দাবি ইসরায়েলের
ছবি সংগৃহিত
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস বিনা কারণে ইসরায়েলে হামলা চালায় নি। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, গত ৫৬ বছর ধরে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের কারণেই হামাস এ হামলা চালিয়েছে।
এবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের পদত্যাগ চেয়েছে ইসরায়েল। হামাসের হামলার ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব যুক্তি দেয়ায় তাদের এই ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটলো। গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) গুতেরেস বলেন, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস বিনা কারণে ইসরায়েলে হামলা চালায়নি—গত ৫৬ বছর ধরে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের কারণেই এ হামলা চালিয়েছে হামাস। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তার এ মন্তব্যের পরই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে ইসরায়েল।
জানা গেছে, মহাসচিব গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদে এমন মন্তব্য করার পরই এ নিয়ে তোলপাড় শুরু করেছে ইসরায়েল। তারা মহাসচিবের তাৎক্ষণিক পদত্যাগ দাবি করেছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গুতেরেস বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে এই সংঘাত বন্ধ হওয়া উচিত। গাজা স্ট্রিপে আমরা যা দেখছি, তা থেকে পরিষ্কার যে সেখানে আন্তর্জাতিক আইন মানা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ওই অঞ্চলে ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে কার্যত পরাধীন হয়ে আছেন। হামাস যে আক্রমণ চালিয়েছে, তা একদিনে তৈরি হয়নি। এই হামাসকে অবশ্য জাতিসংঘ, অ্যামেরিকা, ইউরোপ সকলেই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য করে।
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেন, ‘তার (গুতেরেসের) মন্তব্যের কারণে আমরা জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের ভিসা দিতে অস্বীকার করব। আমরা এরই মধ্যে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স মার্টিন গ্রিফিথসের ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছি। তাদের শিক্ষা দেয়ার সময় এসেছে।’
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান গুতেরেসকে ‘সন্ত্রাসের পক্ষ সমর্থনকারী’ উল্লেখ করে এ দাবি করেন বলে মঙ্গলবার দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইসরায়েলে জানানো হয়।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের জনগণ ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে চালানো সবচেয়ে জগণ্য অপরাধের প্রতি যারা সহানুভূতি দেখায় তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো কারণ ও যৌক্তিকতা নেই।’
এদিকে গুতেরেস এমন মন্তব্য করার পর তার সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে বসবেন না বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন।
তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘আমি জাতিসংঘের মহাসচিক আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করব না। ৭ অক্টোবরের গণহত্যার পর সমানুপাতিকের কোনো স্থান নেই। হামাসকে অবশ্যই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হতে হবে।’
গুতেরেসের এই মন্তব্যের পর তার কড়া সমালোচনা করেছে ইসরায়েল। জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাড এরডান বলেছেন, ‘শতাধিক মানুষকে যারা খুন করেছে, পুরুষ, নারী, শিশু কাউকে রেহাই দেয়নি, সেই হামাসকে সমর্থন করেছেন গুতেরেস। জাতিসংঘের প্রধান থাকার আর কোনো অধিকার তার নেই।’