১০৬ বছরে ভোগের প্রচ্ছদ হয়ে রেকর্ড
বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ভোগ’র ফিলিপাইন সংখ্যার প্রচ্ছদ হয়েছেন তাদের বিশ্বখ্যাত ট্যাটু শিল্পী আপো-ওয়াং-ওদ। তিনি এই মাসের ভোগের প্রচ্ছদ ও ১০৬ বছর বয়সে প্রচ্ছদ হয়ে ১৮৯২ সাল থেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিনটির ইতিহাসের সব প্রচ্ছদ মডেলকেই পেছনে ফেলেননি, বিশ্বরেকর্ডও গড়েছেন।
তিনি মারিয়া ওগেই নামেও খ্যাত। একেবারে কিশোর বয়স থেকে তিনি হাতে ট্যাটু আঁকছেন। তার বাবাই তাকে ঐতিহ্যবাহী ট্যাটু আঁকা শিখিয়েছেন। তিনি জন্মেছেন ও বড় হয়েছেন ম্যানিলার উত্তরের কালিঙা প্রদেশের বুসকেইল্যানের পাহাড়ি গ্রামে। পুরো ফিলিপাইনেরই সবচেয়ে বেশি বয়সের ঐতিহ্যবাহী কালিংঙা ট্যাটুশিল্পী হিসেবে তিনি স্বীকৃত। তাদের বলা হয় মাম্মাবাতো। একটি কেবল বাঁশের লাঠি, বাতাবি লেবুর কাটা গাছ, পানি ও কয়লা মিলিয়ে তাদের আদিবাসী বাতবাত যৌদ্ধাদের বংশপরম্পরায় এঁকে চলছেন এই ট্যাটুর নারী জাদুকর। এখন তার জ্যামিতিক নকশাগুলো হাতে আঁকানোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি হয়েছে ও বিভিন্ন দেশের আগ্রহীরা আসছেন।
ভোগ ফিলিপাইন তাকে প্রচ্ছদ করা নিয়ে তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে, ‘নিজের প্রজন্মের শেষ মাম্মবাতো শিল্পীই তিনিই নন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার অগ্রদূতও। তিনি তাদের কালিংঙা গোষ্ঠী আদিবাসীর চিহ্নগুলোকে আবার ফুটিয়ে তুলছেন। তাদের নির্দিষ্ট শক্তিমত্তা, সাহস ও সৌন্দর্য্যগুলোকে ফুটিয়ে তুলছেন। হাজার, হাজার বুসকেইল্যানের তীর্থযাত্রী তার কাছেই আসছেন ও তাদের চামড়াগুলোতে তিনি নিজেদের তুলে ধরছেন।’
আপো-ওয়াং-ওদ সিএনএনকে বলেছেন, ‘এই শিল্প কেবল রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দেরই শেখানো হয়। আমি আমার নাতনী এলিয়াং উইগান ও গ্রিস পালিকাসকে বছরের পর বছর ধরে আমাদের ট্যাটু আঁকা শিখিয়ে চলেছি। আমিই শেষ মানুষ হিসেবে বেঁচে আছি, যে এখনো ট্যাটুগুলো দিতে পারছে। তারপরও আমি ভীত নই, এই ঐতিহ্য শেষ হয়ে যাবে। কারণ আমি পরের ট্যাটু মাস্টারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ এই ট্যাটুগুলো নেবার জন্য আসবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের শিল্পটি বেঁচে থাকবে। আর যতদিন পযন্ত আমি ভালোভাবে দেখতে পারবো আমি ট্যাটু দিতে থাকবো। যখন আমার চোখ ঝাপসা হয়ে যাবে, তখন আমি থামবো।
ভোগ ফিলিপাইনের প্রধান সম্পাদক বেয়া ভালদেস জানিয়েছেন, ‘এই প্রকাশনার কর্মীরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, আপো-ওয়াং-ওদ এবারের কভার হবেন। আমরা অনুভব করেছি যে, তিনি আমাদের ফিলিপিনোদের সংস্কৃতি কতটা সুন্দর আমাদের সেই ভাবনাগুলোকে তিনি তুলে ধরছেন। আমরা বিশ্বাস করি, সৌন্দর্য্যরে ধারণাগুলোকে প্রকাশ করা প্রয়োজন এবং সেগুলোতে বৈচিত্র্য থাকতে হবে, সেখানে ব্যাপকভাবে নানা ধরনের মুখ ও মাধ্যম থাকতে হবে।’
তার আগে ব্রিটিশ ভোগের প্রচ্ছদ হয়েছিলেন ৮৫ বছরের জেমস বন্ডের অভিনেত্রী জুডি ডেঞ্চ।
ওএফএস/এএস