'জিন পিংয়ের রাশিয়া সফর হবে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তির জন্য’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুক্রবার (১৭ মার্চ) বলেছেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শি জিন পিংয়ের সামনের রাশিয়া সফর হবে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তির জন্য।’
মার্চের ২০ থেকে ২২ তারিখ চীনের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়া থাকবেন। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে রাশিয়া যাচ্ছেন।
‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শি জিন পিং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। তাদের দুজনের নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় চীন-রাশিয়ার ব্যাপক ও অধিকতর বুদ্ধিসম্পন্ন কৌশলগত অংশীদারিত্ব সহযোগিতা একটি নতুন যুগের জন্য পরিচালিত হয়েছে। ফলে অর্জিত হয়েছে দুই দেশের টেকসই, নি:ছিন্দ্র এবং দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত উন্নয়ন’-ওয়াং বলেছেন প্রতিদিনের সংবাদ সম্মেলনে।
‘কৌশলগত বিশ্বাস ও ভালো প্রতিবেশীসুলভ এবং সুদীর্ঘকালের কমিউনিজম আন্ত:সম্পকের ভিত্তিতে এই দুটি দেশ বিশ্বের প্রধান দুই দেশের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে। তারা একটি ভালো উদাহরণ স্থাপন করছেন আন্তর্জাতিক সম্পকগুলোর ক্ষেত্রে একটি নতুন দৃষ্টান্ত’, তিনি যুক্ত করেছেন।
‘নিজের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি গভীর ও বিস্তারিত দৃষ্টিভঙ্গিগত আলোচনা বিনিয়ম করবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে। একসময়ের কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রধান দুটি আঁতুড়ঘর যেগুলো থেকে ভ্লাদিমির লেনিন ও মাও দে জং’র মতো কমিউনিস্ট বিপ্লবীর জন্ম হয়েছে বিশ্বে আলোকবর্তিকা হিসেবে, তাদের দুই প্রধান নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সম্পকগুলোসহ প্রধান দেশীয়, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। তারা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও কৌশলগত উন্নয়ন বাড়ানো, রাজনৈতিক সহযোগিতা (কমিউনিজম) এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন উন্নয়ন ধারণাগুলোকে অন্ত:প্রবিষ্ট করাবেন’, জানিয়েছেন মুখপাত্র।
‘কমিউনিজমের প্রধান দুটি ভুবনের নতুন যুগের দুই প্রধানের এই আলোচনা ও বিশ্বপরাশক্তি কমিউনিস্ট রাষ্ট্র চীনের প্রধানের এই সফর একটি বন্ধুত্বের সফর হবে, ভবিষ্যতে যেটি নির্ভর করবে পারস্পরিক বিশ্বাস ও চীন এবং রাশিয়ার মধ্যে পরস্পরকে বোঝার ওপর ও সুদৃঢ় করবে রাজনৈতিক ভিত্তির ওপর (কমিউনিজম) এবং দেশ দুটির প্রজন্মগুলোর বন্ধুত্বের জনসমর্থনের ভিত্তিতে’ বলেছেন ওয়াং।
তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমার দেশ চীনের প্রধানের রাশিয়া সফর হবে একটি সহযোগিতা সফর। তিনি পারস্পরিকভাবে উপকার হবে এমন সহযোগিতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে করার জন্য কাজ করবে। গভীরতর করবেন সমন্বয়, দুটি পক্ষকে এক করতে কাজ করবেন। তিনি পথগমনাগমন উদ্যোগ ও দি ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউরেশিয়ার বেলারুশ, কাজাখিস্তান ও রাশিয়া) কে আরও কার্যকর করতে কাজ করবেন। তিনি দুটি দেশের কাঙ্খিত লক্ষ্যগুলো অর্জন ও উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে রুশ প্রেসিডেন্ট এবং তার দেশকে চীনের মাধ্যমে সাহায্য করবেন।’
‘এই সফর শান্তিকে লালনপালনের জন্যও হবে’, বলেছেন ওয়াং। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, ‘চীন ও রাশিয়া অপক্ষপাতিত্বের ভিত্তিতে, অসংঘাতের মাধ্যমে এবং অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না করার ভিত্তিতে এগুতে থাকবে। দেশ দুটি সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতার অনুশীলন করবে। একটি বহু মেরুকরণ বিশ্বের উন্নয়ন ঘটাবে। একটি বৃহত্তর গণতন্ত্রের বিকাশ করবে আন্তর্জাতিক দেশীয় সম্পকগুলোর ক্ষেত্রে। উন্নয়ন করবে বৈশ্বিক শাসনের এবং অবদান রাখবে বিশ্বের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে।’
‘চীন তার বিষয়গুলোকে ওপরে ওঠাতে থাকবে এবং নিজের অবস্থানে থাকবে ইউক্রেন সংকটে এবং পালন করবে একটি গঠনমূলক ভূমিকা শান্তির আলোচনাকে এগিয়ে দেবার ক্ষেত্রে’, বলেছেন মুখপাত্র।
ওএফএস/এএস