বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হলো আজ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হলো আজ (২৪ ফেব্রুয়ারি)। করোনাভাইরাস মহামারির সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নতুন এক যুদ্ধের সামনে দাঁড়াতে হয় বিশ্বকে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সেই যুদ্ধ আজ দ্বিতীয় বছরে গড়িয়েছে। ব্যাপক সেনা সমাবেশ ঘটিয়ে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধের এখন পর্যন্ত দুই দেশ হারিয়েছে লাখো সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম। লড়াই দুই দেশের মধ্যে থাকেনি, ইউক্রেনের হয়ে পরোক্ষভাবে সংঘাতে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের মিত্র দেশগুলো। মস্কোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। যুদ্ধের প্রভাবে পুরে বিশ্বের অর্থনীতি এখন টালমাটাল।

এদিকে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছে, এই যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দুই পরাশক্তির লড়াই বিশ্বকে ঠেলে দিচ্ছে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পরমাণু চুক্তি বাতিল ও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার রুশ হুমকির পর তীব্র হচ্ছে সেই শঙ্কা।

জাতিসংঘ বলছে, ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অন্তত ৭ হাজার ১৯৯ জন বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

যুদ্ধের এক বছর পূর্তির একদিন আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এক সভায় ভাষণে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এই যুদ্ধ ‘আঞ্চলিক অস্থিরতা’ উসকে দিচ্ছে, এবং সেই সঙ্গে বিশ্ব জুড়ে ‘উত্তেজনা এবং বিভেদ’ সৃষ্টি করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়, যুদ্ধ নতুন সমস্যা ডেকে আনে। ইউক্রেনের মানুষজন চরম দুর্গতি পোহাচ্ছে। ইউক্রেন, রাশিয়া এবং এই দুই দেশের বাইরের মানুষজনের কাছে এখন শান্তি প্রয়োজন।’

জাতিসংঘ মহাসচিব যখন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন তখন যুদ্ধ আরও বিপজ্জনক মোড় নেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ কমপক্ষে আরও এক বছর চলবে।

নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলার শুরুতে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের বেশ কিছু জায়গা নিয়ন্ত্রণে নেয় রাশিয়া। কিয়েভ ও খারকিভে আক্রমণ করলেও ব্যর্থ হয় মস্কো। শুরুতে খেরসন দখলে নিলেও পরবর্তীতে ধরে রাখতে পারেনি রাশিয়া। ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুত এবং আশেপাশে কৌশলগত বিজয় লাভ করেছে মস্কো। যদিও শহরটি নিয়ন্ত্রণ রাখতে লড়ছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা।

দক্ষিণাঞ্চলের খেরসনের প্রাদেশিক রাজধানী কিয়েভ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেও ডনিপ্রো নদীর পূর্ব দিক রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। সময় যত গড়াচ্ছে, ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের প্রতিরোধ এবং পাল্টা হামলা ততই বাড়ছে। ফলে প্রতিনিয়ত পিছু হটছে রুশ বাহিনী।

রাশিয়া-ইউক্রেন কারো পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই

জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসবিদ নিকোলায় মিত্রোখিন বলেছেন, ‘মৌলিক দৃশ্যকল্প— রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন কোনো দেশই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। রাশিয়ার গোটা দনবাস দখলের সক্ষমতা নেই বললেই চলে। দেশটি জাতি হিসেবে ইউক্রেনকে ধ্বংস করে দেবে।’

‘ইউক্রেন ২০১৪ সালের জানুয়ারির (ক্রিমিয়ার অধিভুক্তি এবং দনবাসে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রুশ সমর্থনের আগে) সেই সীমান্ত আর ফিরে পাবে না।’

‘২০২৩ সালের শেষে কিংবা ২০২৪ সালে এই যুদ্ধ শেষ হতে পারে। কারণ দুই দেশই তাদের রসদ ফুরিয়ে ফেলবে। প্রধান কারণ হলো, ইউক্রেন ও রাশিয়া যা অর্জন করতে চাইছে, তার জন্য দুই পক্ষের কারো কাছেই পর্যাপ্ত অস্ত্র, গোলাবারুদ কিংবা জনবল নেই। ’

দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে যুদ্ধ

লন্ডনের কিংস কলেজের রুশ রাজনীতির অধ্যাপক গুলনাজ শরাফুতদিনোভা বলেন, ‘যুদ্ধের শুরুতে থাকা লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি সামরিক বিপর্যয় সত্ত্বেও এখনো পুতিনের অবস্থান সুদৃঢ়।’

তিনি বলেন, বিভিন্ন অভিজাত গোষ্ঠী হয়ত সামরিক ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রভাব ও কার্যক্রম বাড়িয়ে পুতিনের পেছনে এক হয়েছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, নিষেধাজ্ঞায় ঠিকঠাকভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে না পারা নিঃসন্দেহে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর উৎপাদন ক্ষমতাকে পঙ্গু করে দিয়েছে। কিছু কিছু যন্ত্রাংশ পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে খোঁজা হলেও পুরোপুরি প্রতিস্থাপন সম্ভব হয় না।’

তিনি বলেন, আমার ধারণা এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে। যাই হোক, আমি ইউক্রেনের পাল্টা প্রতিরোধ দেখছি, এর ফল রাশিয়ার উপলব্ধি বদলে দিতে পারে।’

যুদ্ধবিরতি অসম্ভব

রুশ সাংবাদিক ফারিদা রাস্তামোভা বলেন, ‘পুতিনের অবস্থান আগের মতোই স্থির। তার নিরাপত্তা কৌশল, রাশিয়ায় নিজের শক্তি দেখাতে তিনি যেসব ব্যবহার করেন, সেগুলোর কোনো কিছুতে সামান্য পরিবর্তনও আসেনি। তিনি সৈন্যদের ঠিকমতো ভরণপোষণ করেন, বেতন বাড়ানোসহ সব ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকেন। আগামী কয়েক বছরে হয়তো নিরাপত্তা-প্রতিরক্ষায় রেকর্ড পরিমাণ বাজেট দেখা যাবে। রাশিয়ায় এই মুহূর্তে পুতিনকে ক্ষমতা থেকে সরানোর মতো বিরোধী কেউ নেই।’

‘যা চলছে, তা বিবেচনা করলে মনে হয়, নিশ্চিতভাবেই আমরা আরও একটি বছর যুদ্ধের মধ্যেই বাস করতে যাচ্ছি। পুতিনপন্থি চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ বলেছিলেন, বিশেষ অভিযান এক বছরের পরই শেষ হবে। বেশ আকর্ষণীয় বিবৃতি। আমি নিশ্চিত নই, এটি কীসের ওপর প্রতিষ্ঠিত, কিন্তু এটি কৌতূহলপূর্ণ।’

আমাদের সূত্র যা বলে, তাতে এটি স্পষ্ট যে, যুদ্ধবিরতি অসম্ভব। রাশিয়া এখনো অগ্রসর হতে চাইছে। ইউক্রেনও আত্মসমর্পণ করতে চায় না। পরিস্থিতি শান্ত হবে কিংবা যুদ্ধে বিরতি আসবে, এমন কিছু দেখা যাচ্ছে না।’

কোনো পক্ষেরই জয়ের সরাসরি কোনো পথ নেই

যুদ্ধে কে জয় পাচ্ছে সেটি বিভিন্নভাবে মূল্যায়ন করা যায়। বর্তমানে রাশিয়া এবং ইউক্রেন কোনো পক্ষই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ইউক্রেনের লক্ষ্য হলো দখলকৃত সব অঞ্চল পুনরুদ্ধার করা।

তবে গত বছর হামলা চালানোর আগে রাশিয়া যেসব লক্ষ্য ঠিক করেছিল, সেগুলোর বেশিরভাগ থেকে সরে এসেছে। যার মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের সরকারের পতন ঘটানো এবং সেখানে নিজেদের আজ্ঞাবহদের বসানো। এর বদলে এখন তারা পুরো ডনবাস দখল করার দিকে নজর দিয়েছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রাশিয়া গত এক বছরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক একটি সংস্থা গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ইউক্রেনে হামলা করার আগে রাশিয়ার যত ট্যাংক ছিল সেগুলোর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ট্যাংক হারিয়েছে তারা। এছাড়া সেনাদের মধ্যে অনেক প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটেছে। গত সপ্তাহে দাবি করা হয় পূর্ব দিকে ১০০ মিটার অঞ্চল দখল করতে ২ হাজার সেনা হারিয়েছে মস্কো। যদিও এ বিষয়টি বেশ সতর্কতার সঙ্গে দেখতে হবে। তবে রাশিয়ানদের তুলনায় ইউক্রেনীয় সেনারা কম ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে এটি সত্য।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় জেনারেল মার্ক মিলে কয়েকদিন আগে বলেছেন, রাশিয়া কৌশলগতভাবে ইতোমধ্যে হেরে গেছে। তবে তিনি সঙ্গে এও জানান, দুই পক্ষের কেউই এখনই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।

এটি বলা যায়, যুদ্ধের বর্তমান গতিপথ ইউক্রেনের অনুকূলে রয়েছে। তারা পশ্চিমাদের অস্ত্র পাচ্ছে এবং অব্যাহত অস্ত্র আসতে থাকলে এ গতিপথটি ইউক্রেনের পক্ষেই থাকবে।

কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল কয়েকদিন আগে সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্রের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। এমনকি কামানের জন্যও পশ্চিমাদের দিকে চেয়ে থাকে তারা। আর পশ্চিমাদের ওপর অতি নির্ভরতার কারণে পূর্ব দিকে ইউক্রেনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে মূলত কামানের লড়াই চলছে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে সংঘাত ও সংঘাত পরবর্তী অঞ্চলে অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে কাজ করা আলমুত রশোওয়ানস্কি বলেন,‘এই যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ানদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উৎসাহ দেখতে পাই না। তাদের মধ্যে কেবল অবসাদ আর হতাশা। এখন কেউ তাদের উজ্জ্বল ও সুখী ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না।’

তিনি বলেন, রাশিয়ার লাখ লাখ নাগরিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কারণ ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সমাবেশে ডাকার ভয় তাদের মধ্যে রয়েছে। একইভাবে অনেকে ভয়ে রয়েছে, কিন্তু তারা দেশ ছেড়ে যেতে পারছে না। রাশিয়ানদের বড় একটি অংশের দৈনন্দিন জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবর্ণ হয়ে গেছে, তবে করোনার প্রথম বছরের মতো নয়। দেশে এক ধরনের গম্ভীর ভাব বিরাজ করছে।’

তিনি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে উল্লেখ করেন, শিগগিরই এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। কোনো পক্ষেরই সরাসরি জয়ের পথ নেই। কোনো পক্ষই স্বীকার করছে না যে, তারা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চায়। এমন কোনো ইঙ্গিতও নেই যে, রাশিয়া অর্থপূর্ণ আলোচনার জন্য প্রস্তুত।

যে পথে সমাধান

যুদ্ধ বন্ধ অবসানের কার্যকর আলোচনায় বসছে না দুই দেশ। এর মধ্যেই ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ মিত্র দেশগুলো। দীর্ঘদিন ধরে সামরিক ও মানবিক সহায়তায় দিয়ে আসায় অস্ত্রের মজুত ফুরিয়ে আসছে ইউরোপের। যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্রুত কোনো সমাধানে না পৌঁছানো গেলে ভুগতে হবে সবাইকে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান শুরুর দিকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেওয়ার পর কয়েক দফা আলোচনা হলেও সেগুলো ফলপ্রসূ হয়নি। এবার যুদ্ধের এক বছর পূর্তিতে শান্তি প্রস্তাব হাজির করতে পারে চীন।

আরএ/

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দিনভর সিলেটে বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালা শেষে বিকালে সমাপনী বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপি নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশকে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন সিলেট বিভাগের পাঁচ ইউনিটের নেতারা।

কর্মশালায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন- ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আলি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই ঢাকায় গত দুই দিনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সব দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লিখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।

Header Ad

সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: সংগৃহীত

পরাজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েই ছিল। দেখার ছিল টেস্টের শেষ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঠিক কতটা অপেক্ষায় রাখতে পারে বাংলাদেশ। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্যারিবীয়দের। দ্রুতই সফরকারীদের গুটিয়ে বড় রনের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

অ্যান্টিগা টেস্টের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার মেহেদী হাসান মিরাজের দল হারের ব্যবধান কতোটা কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু ৩ উইকেট নিয়ে লড়তেই পারলেন না ব্যাটাররা। দিনের খেলা শুরুর ৪০ মিনিটের মধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে উইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল ২০১ রানে। একইসঙ্গে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। জ্যামাইকায় ৩০ নভেম্বর সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

আগের দিন জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর আজ ২ উইকেট হারাতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলাম চোটে থাকায় ব্যাট করতে করতে পারেন নি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে তিনি ড্রেসিংরুমে।

কাঁধে আঘাত পাওয়ার ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শরিফুল। তাতেই ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। হাতে ১ উইকেট থাকলেও বাংলাদেশ হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগের দিন ১ উইকেট হাতে থাকলেও ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

আজ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু সারতেই যেন মাঠে নামল বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ৪০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে শেষ ইনিংস। খেলতে পারল মাত্র ৭ ওভার। আগের দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পারল মাত্র ২৩ রান।

জাকের আলি ফিরে গেলেন ৩১ রানে। আগের দিন মিরাজ করেন ৪৫ রান। এ নিয়ে টানা তিন সফরে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে হারল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা পঞ্চম হার দেখল দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৫২/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৩২/১০ (জাকের ৩১, হাসান ০, তাসকিন ৪*, শরিফুল ১ আহত আউট; রোচ ৮-১-২০-৩, সিলস ১৩-৩-৪৫-৩, শামার জোসেফ ৬-১-২২-১, আলজারি জোসেফ ৮-১-৩২-২, গ্রেভস ৩-১-১২-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
পরবর্তী টেস্ট: ৩০ নভেম্বর, জ্যামাইকায়

Header Ad

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে বন্দর নগরীসহ সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান
সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ
আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ছয়