জাতিসংঘে সাহায্যের আবেদন পাকিস্তানের
জেনেভায় জাতিসংঘের ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্ট পাকিস্তান’ এ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) মানবহিতৈষী সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে পাকিস্তান।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে গতবছর পাকিস্তানে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করা বন্যায় আক্রান্তদের সাহায্য তহবিল তোলার সংকল্প রয়েছে। এই বন্যায় ১ হাজার ৭৩৯ জন মানুষ মারা গিয়েছেন এবং ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের দেশের এই ভয়াবহ বন্যায় আনুমানিকভাবে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত জাতিসংঘ ক্ষতির মোটে তিনভাগের একভাগ বা ৮১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈশ্বিক সাহায্য তহবিল পাঠাতে পেরেছে। ফলে এই স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশটিকে সাহায্য করতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে বিশ্ব সম্মেলনের আয়োজন করতে হয়েছে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বনেতা ও আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ও দেশীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর প্রধানের কাছে দেশটির ব্যাপকভাবে বিধ্বংসী বন্যার ক্ষয়ক্ষতিগুলো সবিস্তারে তুলে ধরা হবে, তাদের মধ্যে জোরালো প্রাচারাভিযান চালানো হবে ও দেশটির বানভাসী মানুষকে সাহায্য করতে উদারভাবে অর্থ ও অন্যান্য সকল সাহায্য চাওয়া হবে।
এ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ উন্নত ও মধ্য উন্নত দেশগুলোকে এই সম্মেলনের মাধ্যমে একত্রীকরণ করা হচ্ছে। সেখানে সকল দেশের জলবায়ু সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর বিজ্ঞানীদের কাজের জন্য অঙ্গীকার করতে আবেদন করা হবে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট থেকে জলবায়ুর পরিবর্তনের সংকটকে আলাদাভাবেও দেখা হবে। এই পরিবর্তনের আরেকটি প্রবল আঘাত, বন্যা পুরোপুরিভাবে প্রাকৃতিক কারণে ঘটেছে ও ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অবস্থায় দেশটিকে নিমজ্জিত করেছে।
প্রতিবেশী শ্রীলংকার মতো ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি এই দেশটি এবং বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর অধিকারীরা খাবারের দামের ক্রমাগতি উর্ধ্বগতি এবং তেলের দামের বাড়ন্ত অবস্থার মোকাবেলা করছে।
এছাড়াও করোনাভাইরাসের আক্রমণে কোভিড-১৯ রোগের মহামারির মধ্যে রাষ্ট্রটির মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটেছে। তাছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশটিতে রাজনৈতিকভাবে প্রভাব ফেলেছে এবং সবসময়ের মতো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে আইএমএফ’র (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) অর্থবরাদ্দ সত্ত্বেও নির্দিষ্টভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
রাজনীতির ভয়ংকর দুর্বলতার কারণে গৃহহারাদের নিয়ে প্রবল সংকটে ভুগছে দেশটি, দারিদ্রতা এবং মানসম্পন্ন জীবনযাপনের হার অনেক কমেছে। তবে এর ফলে অত্যন্ত গোঁড়া ইসলামপন্থীরা আরও শক্তিশালী হয়েছেন এবং তারা আরও ধর্মীয় চরমপন্থার দিকে ঝুঁকেছেন ও নিজেদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করেছেন এবং রাজনৈতিকভাবেও আক্রমণে চালাচ্ছেন।
ওএফএস/এএস