শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ
শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার।
শুক্রবার (১৭ জুন) জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয় হয়েছে, তীব্র জ্বালানি সংকটের কারণে আগামী দুই সপ্তাহ এ সুযোগ পাবেন তারা। সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়েছে দেশটি।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানির ব্যয় মেটাতে মরিয়া হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অনুসন্ধান করছে শ্রীলঙ্কা। কয়েক দিনের মধ্যেই দেশটিতে মজুত থাকা পেট্রোল ও ডিজেল শেষ হয়ে যেতে পারে। সরকারি অব্যবস্থাপনা এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশটি ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সবচেয়ে বড় সংকটে পড়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, অফিসের অতি গুরুত্বপূর্ণ কর্মী ছাড়া সবাইকে দুই সপ্তাহ বাসা থেকে কাজ করতে হবে। জ্বালানি সরবরাহের সীমাবদ্ধতা, দুর্বল গণপরিবহন পদ্ধতি এবং ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহারে অসুবিধা বিবেচনায় নিয়ে ন্যূনতম কর্মীদের সোমবার থেকে বাড়ি থেকে কাজ করতে অনুমতি দিচ্ছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা দাতাদের মতো জরুরি সেবাদানকারী কর্মীদের অফিসেই কাজ করতে হবে। দেশটিতে প্রায় ১০ লাখ সরকারি কর্মচারী রয়েছে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কা সরকারি কর্মীদের সপ্তাহে চার দিন কাজের অনুমতি দিয়েছে। মারাত্মক জ্বালানি সংকটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া এবং খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করতে সপ্তাহে তিন দিনের ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সোমবার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য সব স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে বৈদ্যুতিক সংযোগ থাকলে তাদের অনলাইনে ক্লাসের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার পাম্পগুলোর সামনে জ্বালানি নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা গাড়ির সারি এ সপ্তাহে কয়েক কিলোমিটার করে দীর্ঘ হতে শুরু করেছে। কেউ কেউ ১০ ঘণ্টা অপেক্ষার পর জ্বালানি নিতে পারছেন। আবার অনেকেই দীর্ঘ সময় রাইনে দাঁড়িয়ে তেল না পেয়ে শূন্য হাতেই ফিরে যাচ্ছেন।
বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহে ঋণছাড় সুবিধা পেতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। সোমবার আইএমএফ প্রতিনিধিদের কলম্বো পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১৭ লাখ শ্রীলঙ্কানকে আগামী চার মাস সহায়তা প্রদানের জন্য ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার সংগ্রহের পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছে জাতিসংঘ।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের কার্যালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, আগামী মাসগুলোতে খাদ্য ঘাটতির কারণে সরাসরি প্রভাবিত হতে পারে প্রায় ৫০ লাখ শ্রীলঙ্কান।
এসএন