ইমরানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার উদ্যোগ সরকারের
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার উদ্যোগ নিয়েছে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভার একটি বিশেষ কমিটির বৈঠকে মামলার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
এ ছাড়া দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ জুন) রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এপিপি এ কথা জানিয়েছে।
‘আজাদি মার্চ’ কর্মসূচি চলাকালে রাষ্ট্রের ওপর ‘হামলার’ কথিত পরিকল্পনার অভিযোগে গিলগিট-বালটিস্তান ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রীদেরও এ মামলায় আসামি করা হবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। এ ছাড়া বৈঠকে ছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী মাওলানা আসাদ মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর কাশ্মীরবিষয়ক উপদেষ্টা কামার জামান কাইরা, অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী সরদার আয়াজ সাদিক, আইন ও বিচারমন্ত্রী আজম নাজির তারার ও ইসলামাবাদ পুলিশের কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ২৫ মে পিটিআইয়ের লংমার্চ বিষয়ে কমিটিকে জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এটিকে রাষ্ট্রের ওপর হামলার আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা বলেও জানানো হয়। ইমরান ও দুই প্রাদেশিক নির্বাহী প্রধানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিষয়ে আলোচনা করেন মন্ত্রীরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ৬ জুন পর্যন্ত বৈঠক মুলতবি করেছে কমিটি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কমিটির চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করা হবে। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বৈঠকে পিটিআইয়ের লংমার্চকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘হাকিকি আজাদি (প্রকৃত স্বাধীনতা) মার্চের’ চেয়ে বরং এটা ছিল দাঙ্গা মার্চ। রানা সানাউল্লাহ বলেন, বিদ্রোহের পাশাপাশি এটা ছিল রাষ্ট্রের ওপর সশস্ত্র হামলা। ২৫ মে রাজধানীকে জিম্মি করার আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘আড়াই হাজার দুর্বৃত্তকে’ ২৫ মের আগে ইসলামাবাদে আনা হয়। এ ‘দুর্বৃত্তরা’ ইমরান খান পৌঁছানোর আগে ডি-চক দখলের চেষ্টা করেছিল বলেও দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এ সশস্ত্র গোষ্ঠী পুলিশ, রেঞ্জারস ও এফসি জওয়ানদের ওপর হামলা করেছে। এ ছাড়া তারা গাছ ও মেট্রো স্টেশনেও আগুন লাগিয়েছে। ইমরান খান নিজেও ২৫ মে ঘিরে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া আদেশ লঙ্ঘন করেছেন।
গত ৯ এপ্রিল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এরপর নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশের পর ২৫ মে ইসলামাবাদে ‘আজাদি মার্চ’ করে তার দল।
রাজধানীতে প্রবেশের পথে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বাধা দেয়। এতে কিছু জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পিটিআই নেতা-কর্মীদের। পরদিন সকালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় সরকারকে ছয় দিনের আলটিমেটাম দিয়ে ইমরান খান হঠাৎ করেই ‘আজাদি মার্চ’ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন। ‘রক্তপাত’ এড়াতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করেন।
এসএন