সিভিয়েরোদোনেতস্ক শহরের কেন্দ্রে পৌঁছেছে রুশ বাহিনী
ইউক্রেনের ডনবাস এলাকার সিভিয়েরোদোনেতস্ক শহরের কেন্দ্রে পৌঁছেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
রুশ সেনারা শহরটির কেন্দ্রে পৌঁছানোর পরও সেখানকার সেনাদের সঙ্গে রাস্তায় তাদের লড়াই অব্যাহত ছিল।
ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্পনগরীর কেন্দ্রস্থলে পৌঁছানোর মাধ্যমে চলমান সামরিক অভিযানে বড় অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রুশ বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবেলা করতে ইউক্রেনের জন্য ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন অস্ত্র সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
৮০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে সক্ষম, এমন উচ্চ গতিশীল আর্টিলারি রকেট সিস্টেমও রয়েছে ওই সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে। রাশিয়ান লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানার জন্যই এ অস্ত্র পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন।
তবে অস্ত্রটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি শর্তও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অত্যাধুনিক এ অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাতে পারবে না ইউক্রেন।
এ শর্তে ইউক্রেন রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তিনি বলেছেন, উচ্চ গতিশীল আর্টিলারি রকেট সিস্টেমগুলো রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাতে ব্যবহার করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউক্রেন। বাইডের প্রশাসন মূলত এ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চাইছেন। আলোচনার টেবিলে ইউক্রেনকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিতেই অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিকে ‘আগুনে ঘি ঢালা’র মতো বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেইরগেই ল্যাভরভ বলেন, ইউক্রেনকে রকেট লাঞ্চার সরবরাহ এ যুদ্ধে তৃতীয় দেশকে টেনে আনার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সিভিয়েরোদোনেতস্ক শহরের চারপাশে কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড লড়াই হয় দুই পক্ষের মধ্যে। এরপর বুধবার শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ করে রুশ সেনারা। শহরটির প্রায় ৭০ শতাংশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রশাসন। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্পনগরীর বেশিরভাগই রুশ বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার মোতুজিয়ানিক বৃহস্পতিবার সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘শত্রুরা সিভিয়েরোদোনেতস্কের কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে অবস্থান করার চেষ্টা করছে।’
একজন সেনা কর্মকর্তা জানান, পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এ যুদ্ধে অন্তত চারজন সেনা নিহত ও ১০ জন সেনা আহত হয়েছেন।
রয়টার্স জানায়, রাশিয়া যদি সিভারস্কি ডোনেটস নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত এ শহর ও এর পার্শ্ববর্তী ছোট শহর লিসিচানস্ক দখল করে নেয় তবে মস্কো লুহানস্কের পুরোটাই দখল করতে সক্ষম হবে। মূলত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষার নামে লুহানস্ক দখলের জন্য হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া।
এ ছাড়া লুহানস্ককে পুরোপুরি দখলের মাধ্যমে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষ্য পূরণ হবে।
এসএন