মাঙ্কিপক্স ১১ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
ছবি: রয়টার্স
মাঙ্কিপক্স ১১ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এখন পর্যন্ত ১১ দেশের অন্তত ৮০ জনের শরীরে এ রোগ ধরা পড়ে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে— ইতালি, সুইডেন, স্পেন, পর্তুগাল, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়ায় ও যুক্তরাজ্যে।
এদিকে সন্দেহভাজন আরএ ৫০ জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্তের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে সন্দেহভাজন এসব মাঙ্কিপক্স রোগী কোন কোন দেশের তা জানানো হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যারা আক্রান্ত হতে পারে তাদের শনাক্ত ও সাহায্য এবং রোগটি নিয়ে নজরদারি বাড়াতে আক্রান্ত দেশ ও অন্যদের সঙ্গে কাজ করছে তারা।’
ডব্লিউএইচও বলেছে, ‘এ পর্যন্ত ১১টি দেশে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক এ প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিক, কারণ এমন কিছু দেশে রোগটি প্রাদুর্ভাব ছড়াচ্ছে যা আগে দেখা যায়নি।’
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ
এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, মাথাব্যথা, হাড়ের জয়েন্ট এবং মাংসপেশিতে ব্যথা এবং দেহে অবসাদ।
জ্বর শুরু হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি শুরুতে দেখা দেয় মুখে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে হাত এবং পায়ের পাতাসহ দেহের সব জায়গায়।
এই গুটির জন্য রোগী দেহে খুব চুলকানি হয়। পরে গুটি থেকে ক্ষত দেখা দেয়। গুটি বসন্তের মতোই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে এসব ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়।
কীভাবে ছড়ায় মাঙ্কিপক্স
সংক্রমিত রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের ক্ষত থেকে এবং নাক, মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে এই ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বানর, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, এমনকি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত বিছানাপত্র থেকেও এই ভাইরাস অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে।
কতটা বিপজ্জনক এই মাঙ্কিপক্স
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের প্রভাব বেশ মৃদু। এর বৈশিষ্ট্য জল বসন্তের মতোই, এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কীভাবে মাঙ্কিপক্সের প্রকোপ ঘটছে
এই রোগ প্রথম ছড়িয়েছিল একটি বানর থেকে। এরপর ১৯৭০ সাল থেকে আফ্রিকার ১০টি দেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এই ভাইরাসে রোগী শনাক্ত হয় ২০০৩ সালে। সেটাই ছিল এই ভাইরাস আফ্রিকার বাইরে ছড়িয়ে পড়ার প্রথম কেস। যুক্তরাষ্ট্রে এপর্যন্ত ৮১টি কেস ধরা পড়েছে।
মাঙ্কিপক্সের সবচেয়ে বড় প্রকোপ দেখা দেয় নাইজেরিয়াতে, ২০১৭ সালে। সে দেশে মাঙ্কিপক্সের প্রথম কেস ধরা পড়ার ৪০ বছর পর। এতে ১৭২ জন আক্রান্ত হন।
মাঙ্কিপক্সের চিকিৎসা
এই ভাইরাসের কোন চিকিৎসা নেই। তবে যে কোন প্রাদুর্ভাবের মতোই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে এর প্রকোপ রোধ করা যায়।
গুটি বসন্তের টিকা ৮৫% কার্যকর বলে দেখা গেছে।
মাঙ্কিপক্সের জন্য এখন এই টিকাই ব্যবহার করা হচ্ছে।
মাঙ্কিপক্স নিয়ে উদ্বেগ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাপক হারে ছড়িয়ে না পড়লে এই ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। ইংল্যান্ডের পাবলিক হেলথ বিভাগের কর্মকর্তা ড. নিক ফিন বলছেন, এটা বুঝতে হবে যে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস খুব সহজে মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে না। সে কারণেই এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্স নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সূত্র: বিবিসি
আরএ/