খরচ কমাতে যুক্তরাজ্যের ২৫ শতাংশ মানুষ কম খাচ্ছে: ইপসোস
সারাবিশ্বে খাদ্য সংকটসহ জীবনযাপনের ব্যয় বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। মূল্যস্ফীতির কারণে নানা দেশ এখন বিপদে। বিপাকে পড়ছে তৃতীয় বিশ্বের মানুষসহ উন্নত দেশগুলোও। এর প্রভাব বাদ পড়েনি যুক্তরাজ্য।
বর্তমানে দেশটির মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ। গত ৩০ বছরের মধ্যে এখন সর্বোচ্চ রয়েছে। খরচ কমাতে ঘর গরম রাখার জন্য যে হিটিং ব্যবস্থা, তাও বন্ধ রাখছেন তিনজনের মধ্যে দুজন। অনেেক গাড়ি চালানো কমিয়ে দিয়েছেন। কেউ আবার কোনো কোনো বেলা না খেয়ে খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
ইপসোস নামের জরিপ সংস্থার এক সমীক্ষা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে এসব তথ্য জানানো হয়। ইপসোস গ্রুপ একটি বহুজাতিক বাজার গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যার সদর দপ্তর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে।
ইপসোস এর জরিপে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে জীবনযাপনের খরচ অনেক বেড়েছে। এ কারণে গ্যাস–বিদ্যুতের বিল কমাতে চেষ্টা করছেন প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজন। অন্যদিকে গাড়ি চালানো কমিয়েছেন ৫০ শতাংশ মানুষ।
আবার ২৫ শতাংশ মানুষ কোনো কোনো বেলা না খেয়ে খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের মধ্য এক-তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতির কারণে তারা কোনো কোনো বেলার খাবার খেতে পারেননি।
খবরে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি নিয়ে দেশটিতে উদ্বেগ এখন গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মানুষ আগামী ছয় মাসে নিত্যপণ্যের মূল্য আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এ প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক গবেষণাবিষয়ক প্রধান গিডিওন স্কিনার বলেন, নানা অর্থনৈতিক পূর্বাভাসের ভিত্তিতে আগামী দিনগুলোয় আরও বেশি উদ্বেগজনক পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, তা হয়তো বলাই যায়। মানুষের জীবনযাপনে উচ্চব্যয়ের সংকট দূর করতে বেশি বেশি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ বাড়বে সরকারের উপর।
বুধবার মূল্যস্ফীতির যে তথ্য যুক্তরাজ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১ শতাংশ। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বলছে, এ বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছাবে।
এ মূল্যস্ফীতি সামলাতে সরকারের ওপর চাপ বাড়লেও এখনই আরও সহায়তা বাড়াতে চান না অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। আগামী শরৎকালে গৃহস্থালি পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিল আরেক দফা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এরপর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। ইপসোস ১১ ও ১২ মে ২ হাজার ৬১ জনের সাক্ষাৎ নেয়।
আগে অন্য এক জরিপে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় জ্বালানির মূল্য প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির হার এখন ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থায় আছে।
এমএমএ/