শক্তি হারিয়ে অন্ধ্র-ওড়িশার দিকে ‘অশনি’
শক্তি হারাচ্ছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। তীব্রতা হারিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে অশনি। ধীরে ধীরে আরও শক্তিক্ষয় হয়ে বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকালে নিম্নচাপে পরিণত হবে অশনি। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এখন অশনি অন্ধ্রপ্রদেশের মাছিলিপত্তনম থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে অশনি। অন্ধ্রের কাঁকিনাড়া থেকে দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার। বিশাখাপত্তনম থেকে ৩১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাইক্লোন। পুরী থেকে অশনির দূরত্ব ৬৬০ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গে সেভাবে ঝড়ের কোনো দাপট দেখা যাবে না। তবে অশনির প্রভাবে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে আজও বৃষ্টি হতে পারে।
অন্ধ্রপ্রদেশে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ওড়িশার বিভিন্ন জেলাতেও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে, আজ ও বৃহস্পতিবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। মঙ্গলবারও কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। কলকাতায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক ৯৫ শতাংশ, ন্যূনতম ৬৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে বৃষ্টি হয়েছে ৪৪.৮ মিমি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার (১১ মে) সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। নদীতে জোয়ারের পানি বেড়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা দেশেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থেকে হচ্ছে ভারি বৃষ্টিও।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলে অবস্থানরত সব লাইটার জাহাজকে সদরঘাট ও শাহ আমানত ব্রিজ এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈরি আবহাওয়ায় মোংলা বন্দরে পণ্য বোঝাই ও খালাস কার্যক্রম ব্যাহত। সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর-নদীতে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা এরইমধ্যে তীরে ফিরে এসেছে।
এদিকে, অশনির পর আরও এক ঘূর্ণিঝড় আসতে পারে। জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। যার নাম সাইক্লোন করিম। ঘূর্ণিঝড় করিমকে হারিক্যান ২ ক্যাটেগরিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটার। এর ফলে কয়েকটি রাজ্যে আবহাওয়ার যে বদল ঘটবে, তা মনে করা হচ্ছে। তবে এই ঝড় সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানায়নি ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।
এসএ/