রক্ত জমাট বাঁধায় জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার ব্যবহার কমাল যুক্তরাষ্ট্র
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারাবিশ্বে আবিষ্কৃত টিকার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানির জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা অন্যতম। এ টিকা এক ডোজ নিতে হয়। তবে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনায় জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্য জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনার টিকার জরুরি ব্যবহারের আওতা সীমিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ মে) যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) বলেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যাদের এমআরএনএ টিকা গ্রহণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বা কোনো শারীরিক জটিলতার কারণে এ ধরনের টিকা নেওয়ার সুযোগ নেই, শুধু তারাই জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিতে পারবেন। খবর এএফপির।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) গত বছর ডিসেম্বরে নাগরিকদের জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা না নেওয়ার পরামর্শ দেয়। এবার যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন সীমিত করার ঘোষণা দিল।
এফডিএর বিজ্ঞানী পিটার মার্কস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজকের এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আমাদের নিরাপত্তা নজরদারি ব্যবস্থার বলিষ্ঠতা প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান ও তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম, তা নিশ্চিত হয়েছে।’
গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ জনের থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম (টিটিএস) ধরা পড়ে। এতে প্রাণসংশয় হওয়ার মতো সমস্যা রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটে, যদিও সংখ্যায় তা খুব বেশি নয়। টিটিএসে রক্তের প্লাটিলেট কমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে যাদের টিটিএস ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
দেখা গেছে, টিকা নেওয়ার এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। এই সমস্যায় প্রাণে বেঁচে গেলেও জীবনব্যাপী এর প্রভাব পড়ে। যেসব নারী মেনোপজ শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী অবস্থায় আছেন, তাদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
কেন এ টিকা ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ করা হয়নি তার ব্যাখ্যায় এফডিএর বিজ্ঞানী পিটার মার্কস স্বীকার করেছেন, পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বিশ্বজুড়ে এ টিকার ব্যবহারের উপর প্রভাব পড়তে পারে। তা ছাড়া যাদের এমআরএনএ টিকার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে, তাদের দিকটাও এখানে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
আগে থেকেই জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিয়ে উদ্বেগ থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এ টিকা নেওয়ার সংখ্যা কমই ছিল। এ পর্যন্ত দেশটিতে ১ কোটি ৮৭ লাখ ডোজ এই টিকা দেওয়া হয়েছে। যেখানে দেশটিতে মোট করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে ৫৭ কোটি ৭০ লাখ ডোজ।
আরএ/