এবার ইউক্রেনে রুশ সাইবার হামলা
রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ইতিমধ্যে বিপর্যস্ত ইউক্রেন। এরই মধ্যে শুরু হলো রুশ সাইবার হামলা। ইউক্রেনে প্রায় ২৪০টি সাইবার হামলা চালিয়েছে ক্রেমলিনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ছয়টি হ্যাকার গোষ্ঠী। বুধবার (২৭ এপ্রিল) মার্কিন টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফটের প্রতিবেদনের বরাতে এ খবর জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মাইক্রোসফটের ভাইস প্রেসিডেন্ট টম বার্ট বলেন, ‘রাশিয়ার সাইবার হামলা ইউক্রেনে তাদের সামরিক অভিযানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলেই মনে হচ্ছে। এটি মস্কোর সামরিক অভিযান গতিশীল করারও একটি কৌশল।’
এর আগে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের বিভিন্ন ব্যাংক এবং সরকারি মন্ত্রণালয়ে সাইবার হামলা চালায় রাশিয়া। সে সময় রাশিয়ার একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে জানান, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে।
পরে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক সাইবার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, সাইবার হামলার কারণে তাদের কিছু সিস্টেম ধীরগতির হয়ে গেছে। সাইবার হামলার শিকার আরেকটি ব্যাংকের গ্রাহকরা একই সমস্যার কথা জানান। অবশ্য এ বিষয়ে তখন কোনো মন্তব্য করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৬৩ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৬৪তম দিন। কিয়েভ থেকে সরে এসে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া। এখন পুরো ডনবাস অঞ্চল তারা দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে রুশ বাহিনীর অভিযান। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/