ইউক্রেনে ২৩৪৫ বেসামরিক লোক নিহত: জাতিসংঘ
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে স্থানীয় সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ হাজার ২৬৪ বেসামরিক লোক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই হাজার ৩৪৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন দুই হাজার ৯১৯ জন। এর আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল হতাহতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, বেশিরভাগ বেসামরিক লোক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিস্ফোরক অস্ত্র ব্যবহারের কারণে। এসবের মধ্যে রয়েছে ভারি কামান এবং একাধিক লঞ্চ রকেট সিস্টেম থেকে গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা।
এদিকে ইউক্রেনের ডনবাসের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী মারিউপোলের পূর্ণ দখল নেওয়ার দাবি করেছে রুশ সেনা বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মারিউপোল দখলের খবরে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পুতিন। তিনি বলেন, মারিউপোল শহরটি ইউক্রেনীয় সেনাদের হাত থেকে ‘স্বাধীন’ করা হয়েছে। ওই অঞ্চলের বৃহত্তম আজোভস্তাল স্টিল প্ল্যান্টেরও দখল নিয়েছে রাশিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৫৭ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৫৮তম দিন। কিয়েভ থেকে সরে এসে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া। এখ পুরো ডনবাস অঞ্চল তারা দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে রুশ বাহিনীর অভিযান। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/