ইউক্রেনে জার্মানির অস্ত্র সহায়তায় ক্ষুব্ধ পুতিন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুরোধে দেশটিতে ভারী অস্ত্র সরবরাহ করতে যাচ্ছে জার্মানি। জার্মান অস্ত্র কারখানা থেকে ইউক্রেনকে এসব সমরাস্ত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। তবে বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে জার্মানিকে কড়া ভাষায় সতর্ক করেছে রাশিয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে জার্মানির কাছ থেকে ফাইটার হেলিকপ্টার, সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক, যুদ্ধজাহাজসহ ভারী অস্ত্র সহায়তার আবেদন জানিয়ে আসছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। অবশেষে তা রাখতে যাচ্ছে জার্মানি।
ইউক্রেনকে ভারী সমরাস্ত্র সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলো ‘চরম ভুল করছে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে কোনো দেশকেই সহজে ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বার্লিনে সাংবাদিকদের জানান, সরাসরি জার্মান সেনাবাহিনীর মজুত থেকে নয়; বরং অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের মাধ্যমেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুরোধ রক্ষা করা হবে। আর সে কারণেই অস্ত্র তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থ সহায়তারও পরিকল্পনার কথা জানান শলৎজ।
জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, আমরা দেশের অস্ত্র তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইতোমধ্যে জানিয়েছি কী ধরনের অস্ত্র সরবরাহ করতে হবে এবং কত টাকার মধ্যে তৈরি করতে হবে। অস্ত্র তৈরিতে কী ধরনের উপাদান লাগতে পারে তাও জানাতে বলেছি।
তবে সবার আগে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গোলাবারুদ, গুলি ও যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র চেয়েছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনে সরাসরি ভারী অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে পরিষ্কার কিছু না জানালেও, দেশটির সহায়তায় সম্ভাব্য সবকিছু করার ঘোষণা দেন চ্যান্সেলর শলৎজ।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৫৫ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৫৬তম দিন। কিয়েভ থেকে সরে এসে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করেছে রাশিয়া। এখ পুরো ডনবাস অঞ্চল তারা দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে রুশ বাহিনীর অভিযান। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/